আজ ১০ নভেম্বর, শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এইদিনে নূর হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। নূর হোসেনের সেই আত্মত্যাগ গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনকে অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় নব্বইয়ের শেষ ভাগে পতন ঘটে তৎকালীন স্বৈরশাসকের।
প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, আলোচনা সভা ও সেমিনার।
এছাড়াও জুরাইন কবরস্থানে শহীদ নূর হোসেন ও নুরুল হুদা বাবুলের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করা হবে।
১৯৮৭ সালের এই দিনটি ছিল সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জনতার উত্তাল আন্দোলনের অগ্নিঝরা দিন। এ দিনে হাজারো প্রতিবাদী যুবকের সঙ্গে জীবন পোস্টার হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল নূর হোসেনও। তার বুকে-পিঠে লিখা ছিল- ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’- এই স্লোগান।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অকুতোভয় সেই যুবকের অগ্নিঝরা স্লোগান সহ্য হয়নি তৎকালীন স্বৈরশাসকের। স্বৈরাচারের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তার বুক ঝাঁজরা করে দেয়। গুলিতে আরও শহীদ হন যুবনেতা নুরুল হুদা বাবুল ও কিশোরগঞ্জ বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো। নূর হোসেনের আত্মত্যাগ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান ও তিন জোটের সংগ্রাম অপ্রতিরোধ্য রূপ লাভ করে।
এই আন্দোলনের জোয়ারে ১৯৯০ সালের শেষ দিকে ভেসে যায় স্বৈরাচারের তক্তপোষ। পতন ঘটে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের। দেশে কায়েম হয় দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন গণতন্ত্র। শহীদ নূর হোসেন হয়ে ওঠেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক। এরপর থেকে প্রতিবছর ১০ নভেম্বর দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।