বাংলাদেশকে আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে সফররত বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) উচ্চ প্রতিনিধিদল। এসব ঋণের মধ্যে রয়েছে, বিশ্বব্যাংকের পলিসিভিত্তিক ঋণ (পিবিএল) এবং এডিবির ইনভেস্টমেন্ট ঋণ। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থদপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের পক্ষ থেকে কোনো ঋণ প্রস্তাব করা হয়নি।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’সহ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে এ ঋণ সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
হুসনে আরা শিখা বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে তিন শর্তে ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে এখন পলিসি সহায়তার জন্য ৭৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে তারা। আসছে ডিসেম্বরে এ সহায়তা পাওয়া যাবে। ইনভেস্টমেন্ট ঋণ ও গ্যারান্টি ফ্যাসিলিটি হিসেবে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক। এটি পেতে আরও সময় লাগবে। এছাড়া এডিবি ১৫০ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার দেবে। প্রথমে ৫০ মিলিয়ন, পরবর্তী দুই দাপে আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার করে দেবে এডিবি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আজকের বৈঠকে গভর্নর প্রতিনিধিদলকে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রক্ষায় সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি প্রণয়ন, টাকার সরবরাহ হ্রাস, সুদের হার দফায় দফায় বৃদ্ধির মাধ্যমে বাজার-ভিত্তিক করা এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং ক্রলিং পদ্ধতিতে ডলারের দর নির্ধারণের বিষয়গুলো জানানো হয়েছে।
প্রতিনিধিদলকে রিজার্ভ সংরক্ষণে বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের (এনআইআর) তথ্য দেওয়ার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংক খাতের সংস্কার, সময় বেধে দিয়ে খেলাপি আদায়ের মাধ্যমে তারল্য ঘাটতি দূরীকরণ, পরিদর্শনের মাধ্যমে অনিয়ম উদঘাটন, এবং আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিতে প্রণীত রূপরেখার বিষয়ে তুলে ধরেন গভর্নর।