সবাই যখন টাইব্রেকারের প্রহর গুণছিল, ঠিক তখনই জ্বলে উঠলেন মিকাইল মেরিনো। দানি ওলমোর দারুণ এক ক্রস থেকে অসাধারণ হেডে গোল করে ১১৯ মিনিটে স্পেনকে নাটকীয় জয় এনে দেন তিনি।
স্টুটগার্ট এরেনায় রুদ্ধশ্বাস এক কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্পেন। এতে তারা উঠে গেছে ইউরো কাপের সেমিফাইনালে, বিদায় হয়ে গেছে স্বাগতিক জার্মানির।
নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ এ সমতায় থাকার পর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন মেরিনো।
প্রথমার্ধে স্পেনের দাপট ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় জার্মানি। দারুণ খেলে নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে এসে গোলও পেয়ে যায়।
১৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ইয়ামালের বাঁ পায়ের শট বেশ ক্লোজ ছিল। পোস্টের ডানদিক ঘেঁষে চলে যায়। এর দুই মিনিট পর ফ্যাবিয়েন রুইস বক্সের বাইরে থেকে মারেন ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ২১ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় জার্মানি। জসুয়া কিমিচের ক্রস থেকে কাই হাভার্টজের বক্সের মধ্য থেকে হেড অবশ্য ফিরিয়ে দেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমন।
৩৫ মিনিটে স্পেনের হাভার্টজকে গোল করতে দেননি নুয়্যার। ৩৯ মিনিটে দানি ওলমো আর ৪৫ মিনিটে ইয়ামালের শটও আটকে দেন জার্মান গোলরক্ষক। গোলশূন্য থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আবারো বল দখলে নিয়ে আক্রমণ করতে থাকে স্পেন। ৪৭ মিনিটে আলভারো মোরাতা গোলের সুযোগ পেলেও তার শট রুখে দেন নুয়্যার। ৫১ মিনিটে জার্মান রক্ষণ দুর্গ ভাঙেন পেদ্রির বদলি নামা দানি ওলমো।
লামিন ইয়ামালের ক্রস থেকে ডান পায়ের জোড়ালো শটে গোল করে দলকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের এবারের ইউরোতে এটি তৃতীয় এসিস্ট।
এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় জার্মানি। একের পর এক আক্রমণে স্পেন ডিবক্সের ভেতর ঝড় তুলতে থাকে স্বাগতিকরা। ৬৪ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা ফুলক্রুগের হেড গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়।
৭০ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ এসেছিল জার্মানির সামনে। আনদ্রিখের দারুণ শট উনাই সিমন রুখে দেন। ৭৭ মিনিটে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গোল আটকে যায় জার্মানির। ফুলগ্রুগের ডান পায়ের শট গোলবারে লেগে প্রতিহত হলে আর সমতায় ফেরা হয়নি তাদের।
একটা সময় স্পেন ৫৫ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখলেও শেষ দিকে জার্মানরা ৫০ শতাংশে তা নিয়ে আসে। ৮১ মিনিটে জামাল মুসিয়ালা ডি বক্সে বল নিয়ে ঢুকলেও তা বাম দিক দিয়ে বাইরে মারেন।
অবশেষে ৮৯ মিনিটে জার্মানিকে কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দেন চলতি মৌসুমের বুন্দেসলিগার সেরা ফুটবলার ফ্লোরিয়ান ভিরতজ। ডিবক্সের ভেতর জটলা থেকে ডান পায়ে গোল করে দলকে ১-১ এ সমতায় ফেরান। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
৯১ মিনিটে ফেরান টরেসের হেড সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ১০১ মিনিটে আনদ্রিখের দারুণ শটও বাইরে চলে যায়।
দুই দল আক্রমণের পাশাপাশি একে অন্যকে মেরেও খেলতে থাকে তারা। ১০৪ নিনিটে ওয়ারজাবালের বাম পায়ের বাকানো শটও খুঁজে পায়নি গোলের নিশানা। ১০৫ মিনিটে আবারো সেই ভিরতজের ডিবক্সের ভেতর নেওয়া বাঁ পায়ের বাকানো শট গোলবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও চলে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ। ১০৬ মিনিটে জামাল মুসিয়ালার শট কুকুরেল্লার হাতে লাগলেও রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি। ১০৯ মিনিটে ফুলক্রুগ ডিবক্সের ভেতর দারুণভাবে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কিক নিলেও তা অন টার্গেটে হয়নি।
কিন্তু ১১৯ মিনিটে যেন হ্যালির ধুমকেতুর মত জ্বলে উঠলেন মেরিনো। দানি ওলমক্র ক্রস থেকে দারুণ হেডে গোল করে দলকে ২-১ ব্যবধানের অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দেন তিনি।