সারা দেশের ন্যায় বরিশালেও বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপ প্রবাহ। তাপপ্রবাহে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য চাহিদা বেড়েছে ডাবের। আর সেই সুবাদে পাল্লা দিয়ে বেড়ে গেছে দামও। আকাশচুম্বী এই ডাবের দাম এখন নিম্ন-মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ছোট বা বড় সাইজের একটি ডাব খেতে চাইলেই গুনতে হচ্ছে বড় অংকের টাকা।সাধারণ মানুষ এখন ডাব কিনতে সাহস পাচ্ছে না। প্রাকৃতিক পানীয় হিসেবে তো বটেই, রোগীর পথ্য হিসেবেও ডাবের বেশ কদর রয়েছে। সেজন্য সারাবছরই ডাবের কদর লক্ষ করা গেলেও প্রকৃতিতে তাপপ্রবাহ চলাকালে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে ডাবের চাহিদার অনুপাতে উৎপাদন ঘাতটির কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা দাম বেড়ে যায়।
একটি ডাব থেকে এক থেকে দেড় গ্লাস পানি হয়। আকারভেদে এসব ডাব প্রতি পিস ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই ডাব কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।সারাদিন গরমে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ চাইছেন একটু তৃষ্ণা মেটাতে। তাই কর্মব্যস্ত জীবনে কাঠফাটা রোদে তৃষ্ণা মেটাতে পানি, ফলের রস ও কোমল পানীয়র পাশাপাশি এখন ডাবের চাহিদা তুঙ্গে। ওষ্ঠাগত প্রাণে শান্তি যোগাতে প্রাকৃতিক পানীয় ডাবের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ডাবের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সে অনুপাতে সরবরাহ না থাকায় একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নগরীর বিভিন্ন ডাবের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি পিস ডাব ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের ডাব যেটাতে এক গ্লাসের মতো পানি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেটা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।মাঝারি মানের ডাব যেটাতে এক গ্লাসের থেকে কিছুটা বেশি পানি রয়েছে তার দাম ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, আর একটু বড় আকারের ডাব যেটাতে দেড় থেকে দুই গালাস পানি পাওয়া যায় সে সাইজের ডাব কিনতে গেলে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। স্বাভাবিকের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় অনেকে শুধু দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন।
সুমন নামে এক ক্রেতা বাজাররোড থেকে এক জোড়া ডাব কিনেছেন ২৫০ টাকায়। তীব্র গরমের কারণে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দোকানিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন কিছুদিন আগেও এই সাইজের একটি ডাব ৮০ টাকায় কেনা যেত।এখন দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
বরিশাল শেরে বাংলা হাসপাতালের সামনে এক ক্রেতা জানান, হাসপাতালের রোগীর জন্য তিনি তিনটি ডাবও কিনেছেন।তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও মাঝারি সাইজের ডাব কিনেছি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এটা এখন দেখি ১৫০ টাকা হয়ে গেছে। ডাবের যা দাম আর মনে হয় রোগীকে ডাব খাওয়াতে পারবো না।
নগরীর হাসপাতাল রোডের ডাব বিক্রেতা জানান, আগে ডাব বিক্রি হতো রকমভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা পিস। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০টাকা পিস। কিচ্ছু করার নেই আমাদের। ডাবের যে চাহিদা সে তুলনায় ডাব পাচ্ছি না।
মুন্সি গ্যারেজ ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, কয়েকদিনের প্রচণ্ড দাবদাহে বাজারে ডাবের চাহিদা বেশ বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি দর এখন কিছুটা বেশি। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি জানান, প্রতি পিস ডাব ১০০-১১০ টাকা দরে কিনতে হয়। ছোট সাইজের ডাব ১২০ থেকে আকারের বড় ডাবের দাম ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। এর কমে করলে লাভ থাকে না। তবে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে চাহিদার সঙ্গে দামও কমে যাবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশালের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জানান, আমাদের বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।কেউ যদি অযথা মূল্য বৃদ্ধি করে আমরা তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন হয় এমন কোন ঘটনা ঘটলে প্রমানসহ লিখিত অভিযোগে অবগত করা বা ১৬১২১ নম্বরে যোগাযোগ করার কথাও জানান তিনি।