১০দিনব্যাপি বিসিক আয়োজিত বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে উদ্যোক্তা মেলায় পণ্য বেচা-কেনা হয়েছে প্রায় ৮১ লক্ষ টাকারও বেশি। পাশাপাশি মেলায় আগত ক্রেতাদের কাছ থেকে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা আরও প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন বিভিন্ন উদ্যোক্তারা। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মেলাটি রবিবার (১৮) ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে শেষ হয়।
বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)-এর আয়োজিত এই মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। এবার দশদিনব্যাপী এই মেলায় অংশ নেয় ১৭টি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৬২টি স্টল, যার মধ্যে অধিকাংশেরই স্বত্বাধিকারী ছিলেন নারী উদ্যোক্তারা।
স্টলগুলোতে পোশাক ও শীতবস্ত্র, খেলনা, ফাস্টফুডসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয়, ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী, অঙ্গসজ্জা ও প্রসাধনী, মৃৎশিল্প, কারুশিল্পজাত পণ্য, গৃহসজ্জা সামগ্রীসহ নানান পণ্যের পসরা সাজিয়েছিলেন বিসিকের সুবিধাভোগী উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি মেলায় আগত শিশুদের জন্য ছিল নানান বিনোদন রাইডের ব্যবস্থা।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, এবারের মেলার মধ্য দিয়ে বিসিকের সুবিধাভোগী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সাথে ভোক্তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ, অবকাঠামো ও বিদ্যুৎখাতের উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং ব্যবসায়ীদেরকে বরিশালের শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
পাশাপাশি তিনি এ জাতীয় মেলা ভবিষ্যতেও আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনদীপ ঘরাইয়ের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি ও ফরচুন সুজ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান, বরিশাল বিসিকের উপ- মহাব্যবস্থাপক মোঃ নজরুল ইসলাম, বরিশাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ- সভাপতি মোঃ আমিনুর রহমান খান এবং বরিশাল জাতীয় ক্ষুদ্রও কুটির শিল্প সমিতি (নাসিব)-এর সহ-সভাপতি আখতার হোসেন।
তাঁদের বক্তব্যে বরিশালের শিল্পায়নে বিনিয়োগ আকর্ষণ, আগ্রহী ক্ষুদ্রও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি ও বিসিকের প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তির নানাদিক, বরিশালে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বেচা-কেনার সুবিধার্থে স্থায়ীভাবে সাপ্তাহিক কোনো বাজার প্রতিষ্ঠা করা, পণ্য ও ব্যবসার বৈচিত্র্যসাধনসহ ভবিষ্যতের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে গুরুত্বারোপের মতো বিষয় আলোচিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের বেকারত্বের হার, দারিদ্র্যের হার এবং শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে তরুণসমাজকে চাকরির পেছনে না ছুটে স্ব-কর্মসংস্থানে আগ্রহী করে তুলতে এমন মেলা নিয়মিত আয়োজন করার ওপর জোর দেন তাঁরা।