২০২৩-২৪ সেশনের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন তানজিম মুনতাকা সর্বা। তিনি রাজধানীর হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। ভবিষ্যতে সর্বা যেন একজন মানবিক চিকিৎসক হন সেই আশা পরিবারের।
মেডিকেলে প্রথম হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তানজিম মুনতাকা সর্বা বলেন, আমাদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে আমি প্রথম ডাক্তার হতে যাচ্ছি। আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ ডাক্তার নেই। ডাক্তার হতে চাওয়ার এটাও একটি অন্যতম কারণ। এছাড়া ডাক্তার হওয়ার জন্য আমার শিক্ষকরাও পরামর্শ দিতেন। তাদের পরামর্শেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। এমবিবিএস শেষ হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবো কোন বিষয়ে ডাক্তার হবো।
এমন সফলতার পেছনে কার বেশি অবদান এমন প্রশ্নে সর্বা বলেন, আমার সফলতার পেছনে বাবা-মায়ের ও শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা আমাকে অনেক বেশি সহযোগিতা করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে মা-বাবাই আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। সব বিষয়েই আমি তাদের সাপোর্ট পেয়েছি। মেডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতির সময় যখন হতাশায় থাকতাম, তখন বাবা-মা এমনভাবে আত্মবিশ্বাস দিতেন সব ঠিক হয়ে যেতো। তাই বলতে পারি আব্বু-আম্মুর সহযোগিতাই আমাকে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
বাবা মা ও ভাই বোনের সঙ্গে তানজিম মুনতাকা সর্বা
সর্বা বলেন, আমার এমন ভালো ফলাফল অর্জনে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও কম নয়। এ কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাদের সাপোর্ট পেয়েছি ফুলটাইম। হলিক্রসে যেভাবে আমাদের পড়াশোনা ও পরীক্ষা নিয়েছে, দ্রুতই সিলেবাস শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনার সময়ও আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
তানজিম মুনতাকা সর্বা ১০০ নম্বরের ১ ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৯২.৫ নম্বর পেয়ে দেশসেরা হয়েছেন। তানজিম সর্বার এমন সাফল্যে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।
তানজিম মুনতাকা সর্বা কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌরসভার বেথইর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান (সবুজ) ও গৃহিণী চায়না বেগম দম্পতির বড় মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। তানজিম মুনতাকা সর্বা ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন।
সর্বার বাবা আব্দুর রহমান (সবুজ) বলেন, আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। একটি কোম্পানির অ্যাডভাইজার হিসেবে কর্মরত রয়েছি। পরিবার নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করি। সর্বা ঢাকায় বড় হয়েছে। তার এমন সাফল্যে আমরা উচ্ছ্বসিত। মেয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন, ভবিষ্যতে সে যেন একজন মানবিক ডাক্তার হতে পারে।
তানজিম মুনতাকা সর্বার চাচা কটিয়াদী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন বলেন, আমার ভাতিজি তানজিম সর্বার এমন সাফল্যে আমরা গর্বিত। ওর সাফল্যের খবরে পরিবার ও এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে।