বয়স মাত্র ২৭। তারুণ্যের আবেগে মাতিয়ে রাখতেন চারপাশ। প্রিয় ক্যামেরা নিয়ে সারাদিন ছুটে বেড়াতেন পথে প্রান্তরে। সমাজের অসহায়দের ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। জড়িত ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গেও। মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু হঠাৎ আত্মহত্যায় সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের জাসদের এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনিক আজিজ।
তার এ চলে যাওয়া কারো কাছে সহজবোধ্য নয়। তবে রাজধানীতে এমপিদের বাসস্থান ন্যাম ফ্লাটের কর্মকারীরা বলাবলি করছেন প্রেমই কাল হলো তার। সকালে ন্যাম ফ্ল্যাট সরেজমিনে দেখা যায়, এমপির ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ। মরদেহ সুরতহালের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতলে নেয়া হয়েছে। সেখানেই গেছেন সবাই। তবে ফ্ল্যাটের নিচে দায়িত্বরত কর্মচারীরা বলাবলি করছিলেন, একটি মেয়ে প্রায়েই অনীকের কাছে আসত। মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ প্রেমই নাকি আত্মহত্যার কারণ। তবে এ বিষয়ে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে চায়নি।
নিজ এলাকার এক অধিবাসী নারী এসেছিলেন এমপির সঙ্গে দেখা করতে। তিনি এসে শুনেন এমপির ছেলে আত্মহত্যা করেছেন। ওই নারীও আফসোস করে বলেন, তাহলে সেই প্রেমই কি কাল হলো? তবে এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও কেউ কোনো মন্তব্য করেননি।
দুপুর ১টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। এ সময় হাসপাতালে এমপি, মরহুমের বোন আদৃতা সৃষ্টি ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এরপর হেলিকপ্টারে তাকে সাতক্ষীরায় নেয়া হয়।
মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসক অধ্যাপক আ ম সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন, গলায় ইন্টারনেটের তার পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। শরীরের আর কোনো জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বাবা এমপি মুস্তফা লুৎফুল্লাহর সকালে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসনে। এরপর ছেলের রুমের দরজায় ধাক্কা দিয়ে না খুললে এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে মরদেহ দেখতে পান।