বিয়ের দেনমোহরের টাকা না দিয়ে সন্তানসহ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার মামলায় বাংলাদেশ বেতারের উপ আঞ্চলিক পরিচালক মুহাম্মাদ মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২০ নভেম্বর) বরগুনার সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক এ এস এম তারিক শামস এ আদেশ দিয়েছেন। মুহাম্মাদ মনিরুল হাসান বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে। তিনি রাজশাহী বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত আছেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, মুহাম্মাদ মনিরুল হাসান ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর পারিবারিক ভাবে রেজিস্ট্রী কাবিনে বরগুনার ব্যবসায়ী মো. বাবুল মিয়ার মেয়ে সানজিদা আরেফিন লিনথার সঙ্গে বিয়ে হয়। তানিশা মেহেজাবিন সাফা ও তাহিরা হাসান সুজনা নামের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মনিরুল হাসান তার স্ত্রীর নিকট যৌতুক দাবি করলে দাম্পত্য জীবনের সম্পর্কে চির ধরে।
স্ত্রী লিনথা বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৯ মার্চ বাকেরগঞ্জ থানায় মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করে। মনিরুল হাসান লিনথাকে তালাক দিয়ে আবার ২০১৯ সালের ২২ জুন ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন।
মনিরুল হাসান তার স্ত্রী লিনথাকে আবার ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে তালাক দেন। লিনথা বাদী হয়ে বরগুনার পারিবারিক আদালতে ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারী মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে দেনমোহরের মামলা করেন।
সেই মামলায় সিনিয়র সহকারী জজ এ বছর ২৭ মার্চ ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৩৩ টাকার রায় প্রদান করেন। বিবাদী মনিরুল হাসান এ রায়ের বিরুদ্ধে বরগুনার জেলা জজ আদালতে আপিল করেন। এ বছর ১৮ অক্টোবর উভয় পক্ষের আপিল শুনানি শেষে জেলা জজ মো. রফিকুল ইসলাম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায় বহাল রেখে মনিরুল হাসানের আপিল খারিজ করে দেন।
বাদী সানজিদা আরেফিন লিনথা বলেন, আমি বরগুনার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে সোমবার ডিক্রী জারির মামলা করেছি। সেই মামলায় মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আমার ১০ ও ৭ বছরের দুটি কন্যা সন্তান রেখে আমাকে মনিরুল হাসান দুইবার তালাক দেয়। সন্তান দুটির কোন খোঁজ নেয় না। অথচ তিনি বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসে চাকরী করেন। মনিরুল পরনারীতে আসক্ত হয়ে আমার সংসার শেষ করে দিয়েছেন। ২০২১ সাল হতে আমার সন্তানদের পড়াশোনা ও আমার ভরণপোষণ দিতেছেন আমার বাবা।
মনিরুল হাসানের আইনজীবী মো. মাসুদ খান বলেন, জেলা জজের রায়ের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল মনিরুল হাসান হাই কোর্টে রিভিশন করবেন। মুহাম্মদ মনিরুল হাসানের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।