ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগে ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

হবিগঞ্জে আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন রহিমা আক্তার (৪০) নামে এক নরী। কিন্তু জরুরি বিভাগের কাছ থেকে তাকে দালাল চক্র স্বল্প খরচে উন্নতমানের চিকিৎসার আশ্বাসে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান। আর সেখানেই অপচিকিৎসার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাতিজা রহমত আলী সোমবার (২৩ অক্টোবর) হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে ডাক্তার ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন।

 

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ডা. এস কে ঘোষ, দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালের পরিচালক সাবেক ইউপি মেম্বার কাঞ্চন মিয়ার ছেলে একে আরিফুল ইসলাম ও তাবির হোসাইন এবং ওই হাসপাতালের ম্যানেজার জনি আহমেদ।

মামলার বাদী রহমত আলী বলেন, ডা. এসকে ঘোষের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় আরও মৃত্যুর অভিযোগ আছে। দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালের পরিচালকদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। ওই হাসপাতালের পরিচালক একে আরিফুল ইসলামকে একবার ভ্রাম্যমাণ আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। কিন্তু তারা দালাল চক্র সৃষ্টি করে একের পর এক অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছে। আমরা নিরুপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আদালতের মাধ্যমে আমরা সুবিচার পাব বলে আশাবাদী।

 

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হাই বলেন, অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে মামলাটি একটি মাইলফলক। এ মামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিয়ে যে হয়রানি বন্ধ হতে পারে।

হবিগঞ্জর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মামলার বিষয়ে জেনেছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের রহিমা আক্তার টিউমারের চিকিৎসা নিতে ৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে আসেন। এ সময় ওই গৃহবধূকে স্বল্প খরচে উন্নতমানের চিকিৎসার কথা বলে ভুল বুঝিয়ে দালালরা সরকারি হাসপাতাল থেকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ভর্তি করানোর পর গাইনি চিকিৎসক ডা. এসকে ঘোষ ওই দিন রাত ১১টা ৫০ মিনিটে রহিমা বেগমের পেটের টিউমারের অস্ত্রোপচার করেন।

 

১২ সেপ্টেম্বর রোগীকে জোর করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়িতে যাওয়ার পর রহিমা বেগমের অবস্থার অবনতি ঘটলে ১ অক্টোবর এসকে ঘোষকে দেখানো হয়। এরপরও তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ২ অক্টোবর রহিমা বেগমকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, হবিগঞ্জে চিকিৎসা করার সময় রহিমা বেগমের খাদ্যনালী, জরায়ু এবং বামপাশের কিডনি কেটে ফেলা হয়েছে। পেটে থাকা টিউমারও যথাযথভাবে অপারেশন করা হয়নি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ অক্টোবর রহিমা বেগম মারা যান।