ইতালি, ইথিওপিয়া, মালয়েশিয়া, মিশর এবং ভিয়েতনামে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলাদা আলাদা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
দীর্ঘদিন পর একযোগে ৫ দেশে রাষ্ট্রদূত পদে রদবদল করল সরকার। শিগগিরই তারা দূতাবাসের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পেশাদার কূটনীতিক মো. শামীম আহসান। তিনি বর্তমানে ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন। সিকদার বদিরুজ্জামানকে ইথিওপিয়ায় বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি মো. নজরুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ভিয়েতনামে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজকে মিসরে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি মো. মনিরুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হবেন। মো. মনিরুল ইসলাম ইতালির এবং মো. লুৎফর রহমান ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
মালয়েশিয়ায় নতুন হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মো. শামীম আহসান বিসিএস ১১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। ২০১৪ সালের এপ্রিলে নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি ওয়াশিংটন ডিসি, রোম, নাইরোবি, দোহা ও কুয়েতসহ বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশের মিশনে দায়িত্ব পালন করেন।
শামীম আহসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্যাল সায়েন্সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি এক সন্তানের বাবা।
ইথিওপিয়ায় রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পাওয়া সিকদার বদিরুজ্জামান বিসিএস (পররাষ্ট্র) ক্যাডারের ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯৮ সালে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ ও সিআইএস উইং-এর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি হংকং, নয়াদিল্লি, রিয়াদ ও ম্যানিলায় বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুবাইয়ে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ছিলেন।
খুলনার বাসিন্দা বদিরুজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে বিএ ও এমএ করেছেন। এছাড়া, তিনি দেশে ও বিদেশে বেশকিছু পেশাগত প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেছেন। অনেক দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বদিরুজ্জামান বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
মিসরের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সামিনা নাজ বর্তমানে ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তিনি বিসিএস (পররাষ্ট্র বিষয়ক) ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি এর আগে মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সামিনা নাজ ১৯৯৫ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। হেগ, নয়াদিল্লির বাংলাদেশ মিশন এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তিনি দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন পেশাগত প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন। রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বিএসএস এবং এমএসএস করেছেন।
ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ পাওয়া মনিরুল ইসলাম বিসিএস ১০ম ব্যাচের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি এর আগে ইথিওপিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং আফ্রিকান ইউনিয়নে স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মরক্কোতেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন।
পেশাদার এ কূটনীতিক সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, স্পেন, চীন, কানাডা ও ব্রাজিলের দূতাবাসে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি নিউ ইয়র্কে কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক (পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়) হিসেবেও কাজ করেছেন এ কূটনীতিক।
মনিরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ও অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পররাষ্ট্র নীতি ও বাণিজ্যের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
ভিয়েতনামে নতুন রাষ্ট্রদূত হওয়া মো. লুৎফর রহমান বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি ১৯৯৮ সালে কূটনীতিক হিসেবে কাজে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি মুম্বাইতে বাংলাদেশের উপ- হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, তিনি হ্যানয়, করাচি, রিয়াদ ও রাবাতে বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ঠাকুরগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করা লুৎফর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে প্রকৌশলে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি দুই সন্তানের জনক।