বেঁচে যাওয়া শেষ সম্বলটুকু উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যবসায়ীরা

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

নিরাপত্তাকর্মীর কাছ থেকে ফোনে আগুনের সংবাদ পেয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে গুলিস্তানের বঙ্গবাজার চলে যান মিল্লাত মিয়া। মার্কেটের নিচতলায় তার দুই দোকানে প্রায় ২০ লাখ টাকার রেডিমেড পোশাক ছিল। ঈদকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে নতুন পোশাক তুলেছিলেন। স্বপ্ন দেখছিলেন ঈদে ভালো বেচাকেনার। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আগুনে পুড়ে শেষ। ২০ লাখ টাকার পোশাকের মধ্যে মাত্র দুই লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করতে পেরেছেন তিনি।

শুধু মিল্লাত নন, তার মতো এমন অনেক ব্যবসায়ীর স্বপ্ন এখন আগুনে পুড়ে ছাই। যে যতটুকু পারছেন মালামাল উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে রাখছেন। ভয়াবহ এই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় চার হাজার ব্যবসায়ী।

 

 

বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী মিল্লাত  বলেন, ভোরে ঘুমে ছিলাম। এসময় ফোন পেয়ে ছুটে এসে দেখি মার্কেটের মাঝখানের অংশ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। মার্কেটের সব প্রবেশ গেটের মধ্যে তালা ছিল। তাই ভেতরে যেতে পারিনি। প্রায় ১০ মিনিট পর ভেতরে গিয়ে দেখি আগুন ধরে গেছে। দোকানে রাখা ২০ লাখ টাকার মালামালের মধ্যে দুই লাখ টাকার মাল উদ্ধার করতে পেরেছি।

 

 

বঙ্গবাজারের দ্বিতীয় তলায় আট বছর ধরে শার্ট-প্যান্টের দোকান রয়েছে সাদ্দাম হোসেনের। ঈদ উপলক্ষে ১৫ লাখ টাকার মালামাল কেনেন বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে। ঈদে ভালো লাভের আশা ছিল তার। সকাল সাড়ে ৭টায় আগুনের কথা শুনে মার্কেটে এসে দেখেন সব পুড়ে ছাই।

সাদ্দাম বলেন, আমার সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সুদে টাকা ধার করে দোকানে ১৫ লাখ টাকার মালামাল তুলেছিলাম। এরমধ্যে ২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। বাকি সব পুড়ে ছাই।

‘এখন আমি কি করমু বলে’ কপাল থাপড়াতে থাকেন এই ব্যবসায়ী।

পাশেই মহানগর কমপ্লেক্সের নিচতলার দোকানদার মো. আলমগীর সকাল ৭টায় খবর পেয়ে মার্কেটে ছুটে যান। তিনি দুই দোকানে রাখা ২০ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্র দেখছেন ব্যবসায়ীরা, ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

আলমগীর বলেন, খবর পেয়ে ছুটে এসে দোকানের কর্মচারী ও পরিচিত লোকজন সঙ্গে নিয়ে মালামাল উদ্ধার করতে পারছি। আর ১০ মিনিট পর এলেই সব পুড়ে যেতে।

 

এর আগে বঙ্গবাজারে মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৫০টি ইউনিট সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পাশাপাশি সেনা ও বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল, নৌবাহিনীর সম্মিলিত দল ও একটি হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয়। কিন্তু ততক্ষণে বঙ্গবাজারসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি মার্কেটের চার হাজারের বেশি ব্যবসায়ীর মালামাল পুড়ে যায়।