জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেওয়া ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচারের (ফসওয়াল) ‘বিশেষ সাহিত্য পুরস্কার’ তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২ এপ্রিল) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন লেখক ও গবেষক রামেন্দু মজুমদার এবং মফিদুল হক। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক অজিত কৌরের চিঠি ও বই এবং উপহার হিসেবে একটি শতবর্ষী প্রাচীন নিদর্শন ‘ফুলকরি চাদর’ হস্তান্তর করা হয়।
গত ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার লেখা ট্রিলজি—‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’র স্বীকৃতি হিসেবে ‘বিশেষ সাহিত্য পুরস্কার’ দেয় ফসওয়াল।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন জানিয়েছেন, পুরস্কার গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী এ পুরস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে বঙ্গবন্ধু হিমালয়ের মতো উচ্চতায় ছিলেন। তিনি তার লেখাতেও অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ আজ একটি বিশ্ব দলিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে সমগ্র জাতির উদ্দেশে দেওয়া অনুপ্রেরণাদায়ক এ ভাষণ একটি রাজনৈতিক মহাকাব্য।
পুরস্কার হস্তান্তরের আগে পাঠ করা সম্মাননা স্মারকে বলা হয়, ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার অসামান্য সাহিত্যিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ৬৩তম সাহিত্য উৎসবে সার্ক সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছে।
প্রখ্যাত পাঞ্জাবি ঔপন্যাসিক এবং ফসওয়ালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অজিত কৌর আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশি লেখক ও গবেষক রামেন্দু মজুমদার এবং মফিদুল হকের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
সার্ক সাহিত্য পুরস্কার হলো—২০০১ সাল থেকে ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার (ফসওয়াল) কর্তৃক প্রদত্ত একটি বার্ষিক পুরস্কার।
সম্মাননা স্মারকপত্রে আরও বলা হয়, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান তার জনগণের কাছে ‘বঙ্গবন্ধু’। তিনি বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের জাতীয় মুক্তির আন্দোলনে সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব। অন্ধকারের শক্তিরা মহাত্মা গান্ধী ও মার্টিন লুথার কিং-এর মতো বঙ্গবন্ধুকেও নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। কিন্তু, পৃথিবীর কোনো শক্তিই তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে পারবে না।’
এতে আরও বলা হয়, ‘কারাগারের রোজনামচা বইটি বঙ্গবন্ধুর জীবনের একটি নতুন দিক উন্মোচিত করেছে।’
‘একজন ব্যক্তি যিনি ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করেছিলেন এবং তার জনগণকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার রচিত ট্রিলজি হচ্ছে রাজনৈতিক দলিল এবং ভালবাসা ও সহানুভূতির সাথে লিখিত একটি মানবিক সনদ।’
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে ২৬ মার্চ থেকে ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক সাহিত্য সম্মেলন হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক বিশিষ্ট লেখক ও সাহিত্যিক যোগ দেন।