‘ইংল্যান্ডের স্কোয়াডে স্রেফ ১৩ জন প্লেয়ার আছে। ওরা কি বাংলাদেশকে ছোট করছে?’ – টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিতের পর মেহেদী হাসান মিরাজকে এমন প্রশ্ন করেছেন এক ইংলিশ সাংবাদিক। সদ্য টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা বাংলাদেশকে হালকাভাবে নিয়েছে বলে মনে করছেন একাধিক ইংলিশ গণমাধ্যম।
তাই সরাসরি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়ের কোর্টে এমন প্রশ্ন। স্বাগতিকদের সিরিজ জয়ের নায়ক মিরাজও মনে করছেন, ইংলিশ লায়ন্সরা হালকা করেই নিয়েছে বাংলাদেশকে। আর অতিথি দলের এই সুযোগটি বাংলাদেশ ভালোভাবে কাজে লাগানোয় বেশ খুশি মিরাজ,
‘হ্যাঁ নিশ্চিতভাবেই (হালকা করে নিয়েছিল)। তারা হয়তো কিছু খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য ভালো সুযোগ। তো আমরা খুবই খুশি এবং এই মুহূর্ত নিয়ে গর্বিত।’
ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দল থেকে আগেই ছিটকে যান ব্যাটিং অলরাউন্ডার টম অ্যাবেল। আর বাংলাদেশ থেকে ইনজুরির কারণে একই হাল হয় উইল জ্যাকসের। দুজনের পরিবর্তে ইংল্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট কাউকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। অথচ ওয়ানডে দলে থাকা জেসন রয় বাংলাদেশ থেকে গিয়ে খেলছেন পিএসএল। এ ছাড়াও অ্যালেক্স হেলস, লিয়াম লিভিংস্টোনের মতো তারকারাও সিরিজের আগে নিজেদের সরিয়ে নেন।
ইংল্যান্ড দলে কে আছেন না আছেন সেই জায়গায় না যেয়ে মিরাজ বলেছেন নিজেদের শক্তির কথা,‘হ্যাঁ অবশ্যই। আপনারা জানেন আমরা ভালো দল। আমাদের দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। আমরা সামনের দিকে তাকাচ্ছি। সামনের ম্যাচ কীভাবে জেতা যায় তা নিয়ে ভাবছি আমরা। আমরা ইতিবাচক থেকে সামনের ম্যাচে কীভাবে আরও ভালো খেলা যায় তা ভাবছি।’
চট্টগ্রামে ৬ উইকেটে জিতে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। আজ রোববার ছিল সিরিজ নিশ্চিতের পালা। সেটি বেশ ভালোভাবেই করেছে সাকিব আল হসানের দল। টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান সাকিব। ব্যাটিং করতে নেমে মিরাজের ঘূর্ণিতে ১১৭ রানে অলআউট হয় জস বাটলারের দল। রান তাড়া করতে নেমে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে লাল সবুজের দল।
এদিন মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন। মাত্র ১২ রানে নেন ৪ উইকেট। এর আগে ১৭ রানে ৩ উইকেট ছিল ক্যারিয়ার সেরা। আর ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেমে ২০ রান করে জয়ে রাখেন বড় অবদান। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচের দলে ছিলেন না, মিরপুরে সুযোগ পেয়েই যেন বাজিমাত করেন এই অলরাউন্ডার।
টিম ম্যানেজম্যান্টের আস্থার প্রতিদান দিতে পারা মিরাজ উচ্ছ্বসিত, ‘টিম ম্যানেজম্যান্ট আমার ওপর ভরসা করেছে। আমাকে খেলিয়েছে এই ম্যাচে। মনে করেছে, আমি এই ম্যাচে খেললে দলকে কিছু একটা দিতে পারব, বিশেষ করে এই উইকেটে। তারা যে আমার ওপর বিশ্বাসটা করেছে, তার প্রতিদান দিতে পেরে নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছে।’
দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড প্রথম মুখোমুখি হয়েছে। এর আগে দুই দলের মাত্র একবাই দেখা হয়েছিল, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে। প্রথম সিরিজে এমন জয় নিশ্চয়ই অবিস্মরণীয়। মিরাজও মানেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানোর আনন্দ কতটা।
‘ওদেরকে হারাতে পেরে অবশ্যই নিজেদের কাছে অনেক ভালো লাগছে। আর সবচেয়ে বড় কথা যেটা, ওদের সঙ্গে আমাদের অত বেশি খেলার সুযোগও হয় না। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। আমি ভুল করব কি না জানি না, ২০ বছরে মনে হয় না ১০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছি ওদের সাথে। ৩টা খেলেছি। এটা প্রথম সিরিজ ছিল। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া আমি মনে করি। যেহেতু আমরা সিরিজটা জিতেছি। ’