সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জন্য মেজবানের আয়োজন নোয়াখালী-৪ আসনের (সদর-সুবর্ণচর) সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এ আয়োজন করা হয়। তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর এই প্রথম ওবায়দুল কাদের নিজের জেলা নোয়াখালীতে এলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, একরামুল করিম চৌধুরীর কবিরহাট উপজেলার সোন্দলপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিখ্যাত বাবুর্চি হাবিবুর রহমান তার লোকজন নিয়ে রান্নার আয়োজন করেন। এর আগেও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের মেজবানের আয়োজন করেছিলেন এমপি একরামুল করিম।
বাবর নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন, আয়োজন সফল করতে আমরা ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেছি। ওবায়দুল কাদের তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। মেজবানের আয়োজন নিয়ে নেতাকর্মীর ও এলাকার মানুষ খুবই প্রণোজ্জ্বল ছিলো। বিশাল আয়োজন বলে কথা। ওবায়দুল কাদের সাহেবের আগমনে আমরা খুশি।
বাবুর্চি হাবিবুর রহমান বলেন, মেজবানে সাদা ভাত, মেজবানি মাংস ও ডাল রান্না হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের নেতা নাঈম বলেন, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের কথা সবার মুখে মুখে। আমাদের এমপি যে আয়োজন করেছেন সকলে উচ্ছ্বসিত। আওয়ামী লীগই পারে এতো বিশাল মেজবানের আয়োজন করতে। সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান হয়েছে।
এ বিষয়ে একরামুল করিম চৌধুরী এমপি বলেন, ওবায়দুল কাদের আমাদের গর্ব। উনাকে আমাদের নেত্রী টানা তৃতীয়বারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। এতে নোয়াখালীবাসী খুবই আনন্দিত। কাদের ভাইয়ের সম্মানে আমি প্রায় ৫০ হাজারের মানুষের খাবারের আয়োজন করেছি। কেউ না খেয়ে ফিরে যায়নি। সুন্দরভাবে মেজবানী সফল হয়েছে।
গত ২৫ ডিসেম্বর টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন কাদের। এরপর ২০১৯ সালেও তাকেই বেছে নেয় দল।
এদিকে, ওবায়দুল কাদেরের সাথে বিবাদের সৃষ্টির পর নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর বাড়িতে আজ প্রথম এসেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
একরামুল করিম চৌধুরীর বাসভবনে আয়োজিত সংবর্ধনায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যের বিকল্প নেই। আমি বিশৃঙ্খলা চাই না। সবাই মিলে সুন্দর পরিবেশে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়যুক্ত করতে হবে। সেক্ষেত্রে ঐক্যের বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ অনেক বেশি শক্তিশালী।
তিনি আরও বলেন, কবিরহাটে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে নেতাকর্মীদের চাকরি দরকার। অন্যায্য দাবি করলে তো হবে না। অনেকের আবেদনের যোগ্যতা নেই, কিন্তু আমাকে চাকরির জন্য বলে। আমি কীভাবে চাকরি দেব। যোগ্য হলে চাকরি হবে। আমিও চেষ্টা করব।
এ সময় একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, উনিও অসুস্থ ছিলেন, আমিও অসুস্থ ছিলাম। এখন উনি সুস্থ এবং আমিও সুস্থ। আমাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি ছিলো। এখন আর সেই ভুল বুঝাবুঝি নেই। আমি চাই আগামী দিনগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে।
কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম উপস্থিত ছিলেন।