ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসান ও ইফতিখার আহমেদের দারুণ ফর্ম চলছেই। সেই সৌজন্যে চলমান আছে ফরচুন বরিশালের জয়রথ। চট্টগ্রামে নাসিরের ঢাকা ডমিনেটরসকে হারিয়ে টানা পঞ্চম জয় তুলে নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ফরচুন বরিশাল। ব্যাট হাতে নাসির এ ম্যাচেও ছিলেন উজ্জ্বল তবে পারেননি শেষ হাসি হাসতে।
চট্টগ্রামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ফরচুন বরিশাল। এ বিপিএলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া সাইফ হাসানকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন এনামুল হক বিজয়। দ্বিতীয় ওভারে সালমান ইরশাদের বলে সাইফ এবং তারপরের ওভারেই আরাফাত সানির বলে বিদায় নেন এনামুল। দুই উইকেটেই দারুণ ক্যাচ নিয়ে অবদান রাখেন তাসকিন আহমেদ। ১৭ রানে দুই উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল।
বড় স্কোর গড়তে পারেননি চতুরাঙ্গা ডি সিলভা। পাঁচে নেমে সাকিব আল হাসান শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজ দেখাতে থাকেন। শেষ ম্যাচে অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংস খেলা সাকিব যেন সেখান থেকেই আবার শুরু করেন। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজ-চতুরাঙ্গা দুজনকেই ফেরান ঢাকা ডমিনেটরসের অধিনায়ক নাসির হোসেন।
তুমুল গতিতে চলতে থাকে সাকিবের ব্যাট। মারকাটারি ইনিংসটা লম্বা না হলেও ফরচুন বরিশালকে দিয়ে যায় লড়াকু স্কোরের ভিত। চারটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকানো সাকিব ১৭ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হন মুক্তার আলির বলে।
সেই ভিত কাজে লাগান আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ইফতিখার আহমেদ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে ‘চাচা’ খেলেন ৩৪ বলে ৫৬ রানের কার্যকরী ইনিংস। ইনিংস সাজান ৫ চার আর ২ ছক্কায়। তার সঙ্গে রিয়াদ অপরাজিত ছিলেন ৩১ বলে ৩৫ রান করে। ৮৯ রানে পাঁচ উইকেট হারানো ফরচুন বরিশাল ষষ্ঠ উইকেটে ইফতিখার-রিয়াদের সৌজন্যে যোগ করে ৮৪ রান।
১৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলকে দারুণ শুরু এনে দেওয়ার চেষ্টা করেন উসমান গনি ও সৌম্য সরকার। সাকিবের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে গনি মারেন দুই ছক্কা, একটি ছক্কা আসে সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। পরের ওভারে ওয়াসিমের বলেও ছক্কা মারেন উসমান। এ ঝড় থামান করিম জানাত। ১৭ বলে ৩০ রান করে বিদায় নেন গনি। দুঃসময়ে থাকা সৌম্য বিদায় নেন পরের ওভারেই। ১৫ বলে ১৬ রান করেন তিনি। দুই ওভারে দুই ওপেনার ফেরত গেলে কমে আসে ঢাকা ডমিনেটরসের রানের গতি।
নবম উইকেটে মোহাম্মদ ইমরান রান আউট হলে কোণঠাসা হয়ে যায় ঢাকা। মোহাম্মদ মিঠুনকে সাথে নিয়ে অধিনায়ক নাসির রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করলেও বলের সাথে রানের ব্যবধান বাড়তে থাকে। একটা সময় ওভারপ্রতি গড়ে রানের চাহিদা ১২ অতিক্রম করে।
নাসির-মিঠুনের ব্যাটে ম্যাচে টিকে থাকে ঢাকা ডমিনেটরস। ইনিংসের ১৪তম ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে নাসিরের হাঁকানো শট মিরাজ তালুবন্দী করলেও পা সীমানা ছুঁয়েছে বলে জানায় থার্ড আম্পায়ার। সময়ের তাগিদে হাত খুলেন মিঠুনও, জানাতের বল পাঠান হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানার বাইরে।
শেষ ২৪ বলে ৫২ রানের সমীকরণ মেলাতে হতো ঢাকা ডমিনেটরসকে। ১৭ তম ওভারে এসে লাইন-লেন্থ হারানো ওয়াসিমের দুই ফুল্টসে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখেন মিঠুন। পরের ওভারে চেপে ধরেন করিম জানাত। ১৯ তমে ওভারে ৪৭ রান করা মিঠুনকে ওয়াসিম বোল্ড করে জয় থেকে দূরে সরে যায় ঢাকা। এ ২ ওভারে রান হয় মাত্র ১৩। অবশেষে ১৬০ রান করে থামে তারা। নাসির অপরাজিত থাকেন ৫৪ রান করে। তার এ ইনিংসে ছিল ৩ চার আর ২ ছক্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল ১৭৩/৫, ২০ ওভার
ইফতিখার ৫৬*, রিয়াদ ৩৫*, সাকিব ৩০
নাসির ২/১৬, আরাফাত ১/১৭
ঢাকা ডমিনেটরস ১৬০/৪
নাসির ৫৪*, মিঠুন ৪৭, উসমান ৩০
চতুরাঙ্গা ১/২২, করিম ১/২৬