মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ।
ভারত: ১৮৬/১০ (৪১.২ ওভার)
সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণি আর ইবাদত হোসেনের গতিতে ৪১.২ ওভারে মাত্র ১৮৬ রানে অলআউট হয় ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান।সাকিব ৫ ও ইবাদত ৪ উইকেট নেন। সাকিবের এটি চতুর্থ ফাইফার। ৩৬ রান দিয়ে এই উইকেটগুলো নেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে কোনো বাঁহাতি স্পিনার ভারতের বিপক্ষে এত কম রানের এত উইকেট নিতে পারেননি। ইবাদত তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন। ৪ উইকেটে ৪৭ রান দেন তিনি। এর আগে সর্বোচ্চ ২ উইকেট ছিল।ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন লোকেশ রাহুল। রোহিত শর্মা ২৭ ও শ্রেয়স আইয়ার করেন ২৪ রান। এ ছাড়া আর কেউ ২০ রানের ঘর পার হতে পারেননি।
ইবাদতের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে ২ উইকেটে ৩৮ রান দিয়েছিলেন। একমাত্র এটিই এতদিন ছিল ইবাদতের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েই ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে। শের-ই-বাংলায় শর্ট বলের ফাঁদে ফেলে ৮.২ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন।
অবশেষে রাহুলকে বিদায় করলেন ইবাদত
রাহুলকে বিদায় করলেন ইবাদত। এক প্রান্তে উইকেটের মিছিল। অন্য প্রান্তে লোকেশ রাহুল যেন অপ্রতিরধ্য। তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। অবশেষে তাকে থামালেন ইবাদত হোসেন। শর্ট বলে মারতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন। ৭০ বলে ৭৩ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
শের-ই-বাংলায় সাকিবের ইতিহাস
একমাত্র সাকিব আল হাসান ছাড়া ওয়ানডেতে বিশ্বের কোনো ক্রিকেটার কোনো একটি মাঠে ১০০ উইকেট এবং ২ হাজার রান নিতে পারেননি। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই নজির আগেই গড়েন সাকিব। ভারতের বিপক্ষে মাত্র ৩৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে আরও এগিয়ে নিলেন নিজেকে।
ভারতের বিপক্ষে অনন্য রেকর্ড সাকিবের
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ইতিহাসে এক অনন্য নজির গড়েন সাকিব আল হাসান। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে ৩৬ রানে ৫ উইকেট নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ওয়ানডে ইতিহাসে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বের যে কোনো বাঁহাতি স্পিনারের এটি ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
সাকিবের পাঁচ উইকেট
লোকেশ রাহুল ফিফটি করলেন, ওয়াশিংটন সুন্দর জীবন পেলেন। ৪ উইকেটে দেড়শ পার করলো ভারত। সাকিব আল হাসান ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে তুলে নিলেন। ভেঙে দিলেন দুজনের প্রতিরোধের দেয়াল। চার রানে চার উইকেট হারালো সফরকারীরা, যার মধ্যে তিনটিই সাকিব আল হাসানের।
৩৩তম ওভারে সাকিব ওয়াশিংটন সুন্দরকে (১৯) ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু আনেন। এরপর এলোমেলো ভারতের ব্যাটিং লাইন।
১১ বলের মধ্যে মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারায় ভারত। সাকিব তার চতুর্থ উইকেট পান পরের ওভারে শার্দুল ঠাকুরকে ফিরিয়ে। একই ওভারে দীপক চাহারকে ফেরান তিনি।
এর আগে বাঁহাতি স্পিনার ১১তম ওভারে জোড়া আঘাতে বিদায় করেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে। তাতে করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চতুর্থবার এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন সাকিব।
সাকিবের ব্রেকথ্রুতে এলোমেলো ভারত
৩৩তম ওভারে সাকিব আল হাসান ওয়াশিংটন সুন্দরকে (১৯) ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু আনেন। এরপর এলোমেলো ভারতের ব্যাটিং লাইন।
১১ বলের মধ্যে মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়েছে ভারত। সাকিব তার চতুর্থ উইকেট পান পরের ওভারে শার্দুল ঠাকুরকে ফিরিয়ে। মাঝে ইবাদত হোসেন ফেরান শাহবাজ আহমেদকে। ৪ উইকেটে ১৫২ রান করা দলটির স্কোর ১৫৬/৭।
শার্দুলকে ফিরিয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের স্পিনার হিসেবে সেরা বোলিং ফিগারের দেখা পান সাকিব।
রাহুলের ফিফটির পর সাকিবের আঘাত
রাহুলের হাফ সেঞ্চুরির পর ভারত তাদের পঞ্চম উইকেট হারালো। সাকিব আল হাসানের শিকার হলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। ৪৩ বলে ১৯ রান করেন তিনি। আগের ওভারে ইবাদত হোসেনকে চার মেরে লোকেশ রাহুল ফিফটি উদযাপন করেন। ৪৯ বলে তিনটি করে চার ও ছয়ে পঞ্চাশ করেন তিনি।
রিভিউ হারালো বাংলাদেশ
ওয়াশিংটন সুন্দরের ক্যাচ ইবাদত হোসেন মিস করেন। পরের ওভারে ভারতীয় ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হলে লিটন দাস রিভিউ নেন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে কোনও পরিবর্তন আসেনি। রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
ওয়াশিংটনের ক্যাচ ছাড়লেন ইবাদত
২৭.২ ওভারে মিরাজের বলে লং অফে উড়িয়ে মারেন ওয়াশিংটন সুন্দর। বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল আরও একটি উইকেট তুলে নেওয়ার। কিন্তু ভুল করে বসেন ইবাদত। ফেলে দেন ক্যাচ। ১২ রানে জীবন পেলেন ওয়াশিংটন।
২২.৫ ওভারে ভারতের ১০০
একই ওভারে রোহিত-কোহলিকে ফিরিয়ে ভারতকে চাপে রেখেছিল বাংলাদেশ। এরপর আইয়ার-রাহুল ৪৫ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন। আইয়ারকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ইবাদত। ৯২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে আছে সফরকারীরা। ২২.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান করে ভারত।
আইয়ারকে ফেরালেন ইবাদত
শ্রেয়স আইয়্যারকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন ইবাদত হোসেন। ধারাবাহিকভাবে শর্ট বল করে সফল ইবাদত হোসেন। ১৯তম ওভারের শেষ বলে পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে সাজঘরে ফেরেন শ্রেয়স আইয়ার। উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন মুশফিকুর রহিম। ৩৯ বলে ২৪ রান করেন শ্রেয়স। একই ওভারে কোহলি-রোহিতকে ফেরানোর রাহুলের সঙ্গে জুটি গড়েন আইয়ার। দুজনের জুটি থেকে আসে ৫৬ বলে ৪৩ রান।
তিন বলের মধ্যে সাকিবের শিকার রোহিত-কোহলি
এসেই রোহিতে উইকেট ভেঙে দেন সাকিব আল হাসান। ১১তম ওভারে তিনি বোলিংয়ে আসেন। রোহিতে ব্যাট থেকে আসে ৩১ বলে ২৭ রান। ১ বল পরেই আবার সাকিবের আক্রমণ। এবার শিকার কোহলি। এক্সটা কাভারে তুলে দেন কোহলি, সেখানে থাকা লিটন শূন্যে ঝাঁপিয়ে একহাতে বল তালুবন্দি করেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন কোহলি। ১৫ বলে ৯ রান করেন ভারতের রান মেশিন। মাত্র ১ রান দিয়ে সাকিব ২ উইকেট নেন নিজের প্রথম ওভারে। ব্যাটিংয়ে শ্রেয়স আইয়্যার ও লোকেশ রাহুল।
মিরাজের ঘূর্ণিতে বোল্ড ধাওয়ান, ব্যাটিংয়ে কোহলি
দলীয় চতুর্থ ওভারে এসে মাত্র ১ রান দিয়েছিলেন। পরের ওভারেই তুলে নেন ধাওয়ানের উইকেট। রিভার্স সুইপ খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। কিন্তু বল ব্যাট মিস করে, ভেঙে দেয় উইকেট। ধাওয়ান ফেরার পর ব্যাটিংয়ে রোহিতের সঙ্গী কোহলি। এই ওভারে ১ রানও দেননি মিরাজ, সঙ্গে নিয়েছেন ১টি উইকেট।
রোহিত-ধাওয়ানে ভারতের সতর্ক শুরু
প্রথম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান মাত্র ১ রান দেন। দ্বিতীয় ওভারে হাসান মাহমুদকে দারুণ চারে বাউন্ডারির সূচনা করেন রোহিত শর্মা। পরের ওভারে মোস্তাফিজকে চার হাঁকান ধাওয়ান। চতুর্থ ওভারে স্পিনার নিয়ে আসেন লিটন। মিরাজ মাত্র ১ রান দেন। ৪ ওভারে ১৩ রান করে সফরকারীরা।
বাংলাদেশ একাদশ
বাংলাদেশ একাদশে ইনজুরির কারণে নেই তামিম ইকবাল, বাদ পড়েছেন তাইজুল ইসলাম। একাদশে ঢুকেছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস।
লিটন দাস (অধিনায়ক), এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ ও ইবাদত হোসেন।
ভারত একাদশ
রোহিত, ধাওয়ান, কোহলি, আইয়ার, রাহুল, ওয়াশিংটন, শাহবাজ আহমেদ, শার্দুল, দিপক, সিরাজ, কুলদীপ।
টস বাংলাদেশের পক্ষ
টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস।
অধিনায়ক লিটনের শুরু
এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে লিটন যুগে নাম লেখাচ্ছে স্বাগতিক দল। নিয়মিত অধিয়ানয়ক ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়ায় এই সিরিজে নেতৃত্বের ভার লিটনের কাঁধে।
ভারতের মতো দলের বিপক্ষে নেতৃত্ব, বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া নিশ্চয় বড় কিছু, দারুণ কিছু। লিটনের চোখও জয়ের দিকেই। ভারত বলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাননি লিটন বা নিজেদের আন্ডারডগ বলেও মন্তব্য করেননি। ঘরের মাঠে জয়ের নেশায় বিভোর লিটন জানিয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা।
লিটন বলছিলেন এভাবে, ‘লক্ষ্য একটাই। জেতার জন্যই খেলতে নামব। ওদের সাথে লড়াই করা পুরোপুরি সম্ভব। আমাদের তিন বিভাগই ভালো আছে।’
প্রেরণা ৭ বছরের আগের সিরিজ জয়
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রেরণা হতে পারে ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে সিরিজ জয়। তারপর প্রায় ৭ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আবার ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছে। ৩০টি ওয়ানডে খেলে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৫টিতে। তার মধ্যে ৪টি দেশের মাটিতে।
রোহিতের আশা দারুণ সিরিজ হবে
দারুণ একটা সিরিজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। ‘আমরা তাদের চেনা পরিবেশে খেলব। সব বিভাগেই তারা আমাদের চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে প্রত্যাশা করি। তারা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ দল, লড়াকু দল। এখানে জিততে হলে আমাদের সেরা খেলাটা নিংড়ে দিতে হবে।’
‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একটি ক্লোজ ম্যাচ ছিল। ২০১৫ সালে এখানে সিরিজ হেরেছি। শেষ কয়েক বছর ধরে দল হিসেবে তারা খুব উন্নতি করেছে। আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে জয়ের জন্য। এটা আমাদের জন্য সহজ কিছু হবে না’ -আরও যোগ করেন রোহিত।
তামিম-তাসকিনকে মিস করবে বাংলাদেশ
তামিম ছাড়াও ইনজুরিতে তাসকিন আহমেদ। দলের সেরা ওপেনারের সঙ্গে প্রধান পেসার তাসকিনের ইনজুরি স্বাগতিক শিবিরের জন্য একটু অস্বস্তিকর বটে। ভারতও হারিয়েছে প্রধান পেসার মোহাম্মদ শামিকে। বদলি হিসেবে স্কোয়াডে যুক্ত হলে নতুন পেস সেনসেশন উমরান মালিক।