কাতার বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বৃহস্পতিবার রাতে মাঠে নামছে পর্তুগাল। স্টেডিয়াম ৯৭৪ এ বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হয় ম্যাচটি।
শ্বাসরুদ্ধকর গোল উৎসবের ম্যাচে পর্তুগালের জয়। ৩-২ গোলে ঘানাকে হারিয়েছে পর্তুগাল। শেষ দিকে গোল খেয়েই বসেছিল পর্তুগাল। গোলরক্ষক কস্তা ডি বক্সে বল ছেড়ে সামনে চলে আসেন। পেছনে দিয়াজ বল ক্লিয়ার না করলে জালেই ঢুকে যেতো। অল্পের জন্য গোলের দেখা পায়নি ঘানা। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই দারুণ খেলে। ৬৫ মিনিট থেকে গোল হয়েছে ৫টি। পর্তুগালের হয়ে ১টি করে গোল দিয়েছেন রোনালদো, ফেলিক্স ও রাফায়েল। আর ঘানার হয়ে গোল ২টি করেন আন্দ্রে ও বুকারি। প্রথমার্ধে একটি আক্রমণও না করা ঘানা দ্বিতীয়ার্ধে ৯টি আক্রমণ করে! অন্যদিকে পর্তুগাল ১০টি শট নেয়। ম্যাচে ৬২ শতাংশ সময় বল পর্তুগালের পায়ে ছিল।
৮৯ মিনিটে আবার ঘানার গোল
বুকারি চমকে দেন পর্তুগালকে। ডান কোনা দিয়ে দারুণ হেডে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন বুকারি। ৩-২ গোলে এগিয়ে পর্তুগাল।
মাঠে নেমেই রাফায়েলের গোল
১৫ মিনিটের ব্যবধানে তিন গোল দিয়েছে পর্তুগাল। ৮০ মিনিটে তৃতীয় গোল দেন রাফায়েল। আবারও গোলের কারিগর বুনো ফার্নান্দেজ। ডি বক্সের বাঁ দিকে বল পেয়েই নিখুঁত ফিনিশিংয়ে বল জড়ান জালে। পর্তুগীজ জার্সিতে রাফায়েলের এটি প্রথম গোল। আর ব্রুনো ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপের কোনো আসরে পর্তুগালের হয়ে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ দুটি সহায়তা করেন। ৩-১ গোলে এগিয়ে আছেন রোনালদোরা।
ফেলিক্সের গোলে আবার এগিয়ে পর্তুগাল
৭৮ মিনিটে জোয়াও ফেলিক্স ব্যবধান দিগুণ করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন। বুনো ফার্নান্দেজের সহায়তায় ডান দিক থেকে পায়ের আলতো শটে ঘানার জালে বল জড়ান ফেলিক্স। ২-১ গোলে এগিয়ে পর্তুগাল।
৮ মিনিট পরেই ঘানার সমতা
৮ মিনিট পরেই সমতা আনলো ঘানা। গোল লাইনের খুব কাছ থেকে আন্দ্রে আইয়ুর পায়ের টোকা খুঁজে নেয় পর্তুগালের জাল। বিশ্বকাপে আন্দ্রের গোল ৩টি। ঘানার হয়ে যেটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
রোনালদোর গোল, এগিয়ে পর্তুগাল
৬৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে রোনালদোর গোল। এগিয়ে পর্তুগাল। ডি বক্সে রোনালদোকে ফাউল করেন সালিসু। পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। বাঁ দিকে জোরালো শটে গোল দিয়ে এগিয়ে দেন দলকে। এর মাধ্যমে ২০০৬ থেকে ৫ বিশ্বকাপে একমাত্র ফুটবলার হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েন।
রোনালদোদের মিসে প্রথমার্ধ শেষে গোল শূন্য ড্র
রোনালদোদের মিসে প্রথমার্ধ শেষে গোল শূন্য ড্র। প্রথমার্ধে দারুণ খেলেছে পর্তুগাল। কিন্তু গোল মিসের কারণে গোলের দেখা পায়নি। রোনালদো শুরুতে একটি নিশ্চিত গোল মিস করেন। পরে একটি গোল দিলেও ফাউল করায় সেটি বাতিল হয়। আরও দুবার নষ্ট করেন সুযোগ। একইভাবে সতীর্থ ওটিবাও বল মেরে দেন বারের বাইরে। প্রথমার্ধে পর্তুগাল ৭টি আক্রমণ করে, বিপরীতে কোনো আক্রমণই করতে পারেনি ঘানা। ম্যাচের ৬৯ শতাংশ সময় বল ছিল পর্তুগালের পায়ে।
বাতিল হলো রোনালদোর গোল
৩১ মিনিটে ডি বক্সের বাম কোনায় জোয়াও ফেলিক্সের পাস রোনালদোর কাছে আসে। দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান। কিন্তু বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে ফাউল করেন। এটাই কাল হলো। গোল দিয়েও উল্লাস করতে পারেননি। কেননা ফাউলের সঙ্গে সঙ্গেই রেফারি বাঁশি বাজান। রোনালদোর কিছু করার ছিল না।
সহজ সুযোগ মিস করলেন রোনালদো
১০ মিনিটে সহজ সুযোগ মিস করেছেন রোনালদো। মাঝমাঠ থেকে সিলভা উড়িয়ে মারেন ডি বক্সে। ঘানার ডিফেন্ডারদের সামনে রোনালদো ছিলেন। নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। গোলরক্ষকের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে যান মাটিতে। সহজ সুযোগ মিস করে পর্তুগাল। ১৩ মিনিটে কর্নার থেকেও লাফিয়ে উঠে হেড দিতে গিয়ে বাইরে মেরে দেন।
পর্তুগালের বিশ্বকাপ হতাশা
বিশ্ব ফুটবলে পর্তুগাল আইকনিক একটি দল হলেও এ পর্যন্ত কেবল দুইবার তারা সেমিফাইনাল খেলতে পেরেছে। তার মধ্যে ১৯৬৬ সালে প্রথম এবং ২০০৬ সালে সবশেষ। এরপর গেল পাঁচ আসরে কখনোই তারা শেষ ষোলোর গণ্ডি পেরুতে পারেনি।
এই সময়ে বিশ্বকাপে তাদের পারফরম্যান্সও খুব উল্লেখযোগ্য নয়। সবশেষ ১১ ম্যাচে তারা জিতেছে মাত্র ৩টিতে। এছাড়া বিশ্বকাপে নিজেদের সবশেষ তিন প্রথম ম্যাচের একটিতেও জয় পায়নি ফার্নান্দো সান্তোসের দল। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তারা ৪-০ গোলের বড় জয় পেয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই আজ ঘানার মুখোমুখি হবে।
ঘানাও ছেড়ে দেবে না
ঘানা অবশ্য বেশ সমীহ আদায় করে নেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করছে। সবশেষ আট ম্যাচের সাতটিতেই জিতেছে তারা। সাতটিতেই ছিল ক্লিন শিট। আট ম্যাচে গোল হজম করেছে মাত্র ২টি। ২০১৮ বিশ্বকাপে তারা খেলতে না পারলেও এবার তারা দারুণ কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছে।
ঘানা অবশ্য পর্তুগালের অচেনা প্রতিপক্ষ নয়। ২০১৪ বিশ্বকাপে তাদের দেখা হয়েছিল। সেবার রোনালদোরা জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। আজ আবারও জয়ের শিরোনাম লিখতেই মাঠে নামবে পর্তুগীজরা।
আলোচনায় রোনালদো
অবশ্য বিশ্বকাপ শুরুর আগ থেকেই আলোচনায় আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আর সেটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে তার দেওয়া জ্বালাময়ী সাক্ষাৎকারের জন্য। বিশ্বকাপ খেলতে মাঠে নামার একদিন আগে ম্যানইউর সঙ্গে তার চুক্তি মাঝপথেই শেষ হয়ে গেছে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে মোটেও ভাবছে না পর্তুগাল শিবির।
যেমনটা বলেছেন পর্তুগালের সেন্টার ব্যাক রুবেন দিয়াস, ‘আমি মনে করি না যে রোনালদোর বিষয়গুলি আমরা এখানে যা অর্জন করতে এসেছে তাতে কোনও প্রভাব ফেলছে। তাই এ সম্পর্কে আমার বেশি কিছু বলার নেই। এই বিষয়ে ইতোমধ্যে যথেষ্ট কথা বলা হয়েছে। যোগ করার মতো আর কিছুই নেই। দল হিসেবে আমরা এখন বিশ্বকাপে ফোকাস করব, অন্যান্য বিষয়ে নয়।’