সাভার পৌরসভা এলাকায় দুই শতাংশ জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে প্রায় ৩০ বছর যাবত দ্বন্দ্ব চলে আসছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারেননি।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সর্বশেষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আলী ও সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাভার পৌরসভার জামসিং এলাকার আব্দুর রহমান মোল্লা (৯৫) ও আলাল উদ্দিন মোল্লা (৮০) নামের দুই ভাইরের ৫৬ শতাংশ জমি ছিল। সেখান থেকে তারা ২৬ শতাংশ করে জমি পেয়েছেন। আর বাকি চার শতাংশ জমির মধ্যে দুই শতাংশ রাস্তার জন্য দিতে চেয়েছিলেন ছোট ভাই আলাল উদ্দিন মোল্লা। কিন্তু বড় ভাই আব্দুর রহমান মোল্লা রাস্তা না করতে দিয়ে সেখানে দেওয়াল তৈরি করেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সর্বশেষ গত বুধবার (১২ অক্টোবর) ভেকু দিয়ে সেই দেওয়াল ভেঙে ফেলেন আলাল উদ্দিন মোল্লা ও তার ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েও অভিযোগপত্র জমা না দিয়ে ফিরে এসেছেন আব্দুর রহমানের নাতি মোয়াজ্জেম হোসেন।
তিনি বলেন, ‘গত বুধবার সকালে কিছু সন্ত্রাসী আলাল উদ্দিন মোল্লা ও তার ছেলের নেতৃত্বে আমাদের বাড়ির দেওয়াল ও ঘর ভেকু দিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় তারা সব কিছু ভেঙে ফেলাসহ আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।’
মোয়াজ্জেম হোসেন আরও বলেন, ‘রাস্তার জন্য আমরা ৫ ফিট জমি দিয়েছিলাম কিন্তু আলাল উদ্দিন মোল্লারা বলছে, তারা রাস্তার জন্য ১২ ফিট নিবে। সেই প্রেক্ষিতে বলেছিলাম, আমরা যদি ১২ ফিট দেই তাহলে বাড়ির পেছনে যেখানে জমি আছে সেখান থেকে আমাদের জমি দেন। কিন্তু তারা কোনো জমি না ছেড়ে এখান থেকেই ১২ ফিট দখল করতে আসে।’
আলাল উদ্দিন মোল্লার স্ত্রী খোদেজা বেগম বলেন, ‘৩০ বছর ধরে এই রাস্তা নিয়ে মারামারি হচ্ছে। অথচ দুই ভাই সমান দুই শতাংশ করে জমি পাবে। আমাদের দুই শতাংশ আমাদের দিয়ে দেক কিন্তু তারা সেটা না দিয়ে পুরো জমির ওপর দেওয়াল তৈরি করেছে৷’
সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আলী বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কার কতো ক্ষতি হয়েছে সেই তালিকা দিতে বলেছি। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে প্রশাসন নিয়ে বিষয়টি সমাধানের আলোচনা চলছে।’
সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এক পক্ষ অভিযোগ লিখেছিল কিন্তু থানায় জমা দেয়নি। তাদের ডেকেও পাচ্ছি না। তারা মামলা করলে মামলা নেব। এটা তাদের নিজেদের ব্যাপার।’