ঘুসের এক লাখ টাকা ফেরত দিলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসাইন। ঘুস নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি সালিশ বৈঠক শেষে অভিযোগকারীকে ওই টাকা ফেরত দেন তিনি।
এ ঘটনায় কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কক্সবাজারের সদস্য পরিচয়ধারী রিদুয়ানকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে প্রশাসন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রামুতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ওইদিন পরিমাপে তেল কম দেওয়ার অভিযোগে রামু চৌমুহনীর নাহার ফিলিং স্টেশনকে প্রথমে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসাইন। পরে ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ এত টাকা জরিমানা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সিলগালা করে দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটি।
সিলগালা করার পর ক্যাব ককক্সবাজারের সদস্য পরিচয় দানকারী রিদুয়ান ফের ওই ফিলিং স্টেশনে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ঘুস দাবি করেন। পরে রিদুয়ানের সঙ্গে ঘুসের বিনিময়ে রফাদফা করে নাহার ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এরপর সন্ধ্যায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসাইন আবারও নাহার ফিলিং স্টেশনে যান। আগের জরিমানার জায়গায় নতুন করে ২০ হাজার টাকা জরিমানার স্লিপ দেন এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে স্টেশনের সিলগালা তুলে নেন।
বিষয়টি ফিলিং স্টেশনের কর্মকর্তারা তাদের মালিক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এজাজুল ওমর চৌধুরী প্রকাশ বাট্টু মিয়াকে জানান। পরে তার পরামর্শে নাহার ফিলিং স্টেশন ম্যানেজার আবদুল্লাহ কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ঘুসের এক লাখ টাকা ফেরত দেন ইমরান হোসাইন।
বৈঠকে কক্সবাজারের এডিএম আবু সুফিয়ান, তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, অভিযুক্ত ইমরান হোসাইন ও তার সহযোগী রিদুয়ান এবং অভিযোগকারীরা উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষ্যপ্রমাণে ঘুস নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, ঘুসের ১০ হাজার টাকা রিদুয়ান এবং বাকি ৯০ হাজার ইমরান হোসাইন নিয়েছিলেন। পরে রিদুয়ানকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় প্রশাসন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান বলেন, রিদুয়ানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সহকারী পরিচালক ইমরান হোসাইনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইমরান হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হয়। রিং হলেও ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন তিনি।