বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার চেতনাকে মুছে ফেলতে পারেনি-বিসিসি মেয়র

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারসহ নির্বংশ করার প্রক্রিয়ায় তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শুধু একজন ব্যক্তি নয়, বঙ্গবন্ধু একটি চেতনার নাম। সেদিন তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার চেতনাকে মুছে ফেলতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ, বাংলা ভাষাভাষী মানুষ থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে এটা আমার বিশ্বাস।

সোমবার (১৫ আগস্ট) মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্তনখোলা অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসানের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের সভাপতিত্বে সভায় সিটি মেয়র বলেন, আজকের তরুণ প্রজন্মই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর চেতনার ধারক ও বাহক। এ চেতনাকে ধারণ করে তারাই একদিন গড়ে তুলবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

তিনি বলেন, গত বছরের ১৮ আগস্ট রাতে বরিশালে একটি ঘটনা দেখেছেন আপনারা। সেখানে আমার নেতাকর্মীদের চোখে ও গায়ে গুলি লেগেছিল। আমার গায়ে গুলি করা হয়েছিল। আপনাদের কাছে মনে হয় এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি তারা যে এখনও কাজ করছে এটা হচ্ছে তার একটা আভাস।

নাহলে একটা মেয়রের গায়ে গুলি করবে, মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার কারণ কী? যদি কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ থাকতো বা যদি কোনো অপরাধ থাকতো তাহলে কথা ছিল না। আজ দেশের যারা শত্রু তারা অটোমেটিক আমার শত্রু, আজ যারা আওয়ামী লীগের শত্রু তারা আমার অটোমেটিক শত্রু।

মেয়ল বলেন, আমরা নীতিগতভাবে একটা পরিবর্তন এনেছি বরিশালে। বরিশাল আজ শান্তির নগরে পরিণত হয়েছে। এজন্য প্রশাসনের সহায়তা রয়েছে তবে আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছা না থাকলে এটা সম্ভব হত না।

১৮ আগস্টের ঘটনার পর আমাকে নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি হয়েছে, কিন্তু নেগেটিভ কিছুই পায়নি। আজ আমার কিংবা সিটি করপোরেশনের যদি কোনো দুর্নীতি পেত তাহলে কোনোদিনও ছেড়ে দিত না। আমি সবসময় বলি রাজনীতি ভোগের জন্য নয়, ত্যাগের জন্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।

রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আব্দুল কাইউম, বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আরিফ হোসেন ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন।

সভা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এর আগে দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৯টায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অংশগ্রহণে শোক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালি শেষে সকাল সাড়ে ৯টায় ৬ দফা স্মৃতিস্তম্ভে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর পর্যায়ক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, গ্রেড ১১-১৬, গ্রেড ১৭-২০ কল্যাণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু হল, শেখ হাসিনা হল, শেরে বাংলা হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, ২৪টি বিভাগসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নেয়।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এদিন পবিত্র কোরআন খতম, মসজিদ-মন্দিরে দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনা এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ, গ্রেড ১৭-২০ কল্যাণ পরিষদ কর্তৃক বৃক্ষরোপণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের উদ্যোগে সন্ধ্যায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।