হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের নাবিক ও থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের কফিন ছুঁয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স।
এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রিন্স বলেন, ভাই, ও ভাই, তুমি কোথায় চইলা গেলা। আমি, আব্বা, আম্মা কীভাবে বাইচা থাকবো? আব্বার ওষুধ কেনে দেবে কে? মা কার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা কইবে? এ সময় তার আহাজারিতে বিমানবন্দরের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে হাদিসুর রহমানের মরদেহ বহনকারী ফ্রিজার ভ্যান তার নিজ গ্রাম বরগুনার বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। মরদেহের সঙ্গে রয়েছেন হাদিসুরের পরিবারের সদস্যরা।
হাদিসুর রহমানের মরদেহ বুঝে নিতে বিমানবন্দরে আসা চাচা মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে হাদিসুরের জানাজা হবে। এরপর মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
তিনি বলেন, দাদা আতাহার উদ্দীন হাওলাদার ও দাদি রোকেয়া বেগমের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তাদের আদরের নাতি হাদিসুর।
এর আগে, ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত হাদিসুর রহমানের নিথর দেহ সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
গত রোববার রাতে (১৩ মার্চ) হাদিসুরের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও শনিবার রাতে বুখারেস্ট এয়ারপোর্টে প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে হাদিসুরের মরদেহ বহনকারী তার্কিশ এয়ারের নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল হয়। পরবর্তীতে রোববার রাতে বুখারেস্ট ছাড়ে হাদিসুরের মরদেহবাহী প্লেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা কর্পোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।