বরিশালে নদী খননে কাটা পড়েছে সাবমেরিন কেব্‌ল

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের মাসকাটা নদী খনন করতে গিয়ে কাটা পড়েছে এর তলদেশ দিয়ে যাওয়া সাবমেরিন কেব্‌ল। এতে ওই উপজেলার প্রত্যন্ত তিনটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলার চরগোপালপুর, জাঙ্গালিয়া ও আলিমাবাদ ইউনিয়নের পাঁচ হাজার পরিবার ডুবে আছে অন্ধকারে। এমনকি ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এক ডজন বাজার এবং বিভিন্ন স্থাপনার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কবে নাগাদ কেব্‌ল সংস্কার করা যাবে, তা জানাতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ।

বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সাবমেরিন কেব্‌ল কাটা পড়ায় জাঙ্গালিয়া ও গোপালপুরের একাংশের অফ গ্রিডের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে।

ড্রেজিং করতে গিয়ে কেব্‌ল কেটে ফেলা হয়েছে। নদীর তলদেশ থেকে ওই কেব্‌ল তোলার জন্য ডুবুরি নিয়োজিত করা হবে। খুলনা থেকে কেব্‌লও আনা হচ্ছে।’ তিনি এরই মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জেনারেল ম্যানেজার মান্নানের ধারণা, ওই ঘটনায় প্রায় ৩ কোটি টাকার কেব্‌লের ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনা তদন্তে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ডিজিএমকে (টেকনিক্যাল) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন উপজেলার চরগোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল বারী মনির বলেন, মেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাট লঞ্চঘাটসংলগ্ন এলাকায় নদী খনন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এর আশপাশ দিয়ে মাসকাটা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেব্‌ল গেছে। এ জন্য লাল নিশানও দেওয়া আছে।

৮ মার্চ যাঁরা ড্রেজিং করেন, তাঁরা সীমানার বাইরে এসে খনন করায় কেব্‌ল কেটে ফেলেন। এতে মাসকাটা নদীর দক্ষিণে চরগোপালপুর, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের পুরোটা ও আলিমাবাদ ইউনিয়নের কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ওই সব এলাকার পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার এ কারণে চার দিন ধরে অন্ধকারে আছে।

জানতে চাইলে ড্রেজিং বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন জানান, মেহেন্দীগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকা খননের আগে পল্লী বিদ্যুতের লোক এসে নদীতে লাল নিশান দিয়েছিলেন।

তাঁরা অনুমানের ওপর সাবমেরিন কেব্‌লের ১৫০ ফুট ছেড়ে লাল নিশান দেন। কিন্তু জোয়ার-ভাটায় কেব্‌ল নড়াচড়া করে স্থানচ্যুত হওয়ায় ৮ মার্চ সকালে খননকালে কেব্‌ল কেটে যায়। তিনি দাবি করেন, চিহ্নিত অংশের বাইরেই নদীর বালু কেটেছেন তাঁরা।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, তাঁরা কাটা পড়া কেব্‌ল তুলে ফেললে ওই স্থান ড্রেজিং করা হবে। না হয় আগামী বছর কোনো লঞ্চ মেহেন্দীগঞ্জে নাব্যতা-সংকটে ঢুকতে পারবে না।

পল্লী বিদ্যুতের মেহেন্দীগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের এ জি এম জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে। কী করবেন তাঁরাই জানেন। কবে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া যাবে তা-ও জানা নেই।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুন্নবী বলেন, উপজেলার দুটি ইউপিতে পুরোপুরি এবং একটির আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চার দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ড্রেজিং বিভাগ এটি ইন্টেনশোনালি করেছে।

এতে সরকারের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগকে বারবার সতর্ক করে জেটির ওপাশে যেতেই নিষেধ করেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ তাঁদের চিঠি দিয়েও সতর্ক করেছিল। ইউএনও জানান, কেব্‌ল কাটার ঘটনায় তিনি পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।