শামীম আহমেদ \ ২০২১ সালে বন্দি জীবনের অবসান ঘটে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার দরিদ্র কৃষক আনিস মৃধার মেয়ে পিয়ারা আক্তারের। মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ ২৬ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়া পর পিয়ারা’র দ্বায়িত্ব নেন বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
পিয়ারাকে পূর্নবাসিত করার জন্য জেলা প্রশাসক বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বর্তমানে পিয়ারা ভালো আছেন। গত তিন মাস পূর্বে ঝালকাঠী জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলা পাটি খাল ঘাটা গ্রামের হাসেম ফকিরের ছেলে সেলিম ফকিরের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় পিয়ারা।
বিয়েতে বরিশাল জেলা প্রশাসক ও পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে পিয়ারা ও তার স্বামী সেলিম ফকির জেলা প্রশাসকের বাসভবনে দেখা করতে আসলে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার তাদের দাম্পত্য জীবনের শুভকামনা করে ফুলের শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি তাদের জন্য বাংলোতে দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন। এসময় পিয়ারা আবেগাপ্লæত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ভালোবাসা দিবসে এক অনন্য ভালোবাসার দৃষ্টান্ত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রাবেশন অফিসার বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রবেশন অফির্সার সাজ্জাদ পারভেজসহ আরও অনেকে। উল্লেখ্য, পিয়ারা বেগম বয়স ১১ পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো, ভালো মন্দ কিছু বুঝে উঠার আগেই জীবন যৌবন পার করেছে চার দেয়ালের মাঝে।
পুলিশ ২৪ এপ্রিল ১৯৯৭ সালে স্কুল থেকে ধরে নিয়ে এসেছে আর ফেরা হলোনা পিয়ারার স্কুলে। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় পরিবারের কেউ তেমন খোঁজ খবর নেয়নি তার। কিছুদিন পরে বাবার মৃত্যুতে হাড়িয়েছে অভিভাবকের ছায়া।
দীর্ঘ ২৬ বছর কারা ভোগের পরে গত ১০ জুন ২০২১ সালে বন্দি জীবনের অবসান ঘটে পিয়ারা আক্তারের। তিন ভাই বোনের মধ্যে পিয়ারা সবার ছোট। পুকুরের পানিতে ডুবে চাচাতো বোনের মৃত্যুতে কারনে কারাভোগ করেন পিয়ারা।
২৬ বছর জীবন থেকে হাড়িয়ে গেছে অনেক কিছু। ৩৮ বছরের নারী পিয়ারা আক্তারের। জীবনের বাকি সময় টুকু ভালো ভাবে কাজের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করতে চায় পিয়ারা। পরে পিয়ারা আক্তারের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা শুনে তার ভবিষ্যৎ জীবনের কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার তাকে চাকরি দেয়ার পাশাপাশি একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন।