সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বছরজুড়ে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। তবে বসন্তবরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সোমবার সৈকতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। কেউ পরিবার, কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে বিশেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে এসেছেন সৈকতপাড়ে। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মুহূর্ত উপভোগ করেছেন হইহুল্লোড় করে।
তবে লাখো মানুষের ভিড়ে দেখা মিলেছে ব্যতিক্রমী চার বন্ধুকে। তাদের সবার বয়স ষাটের বেশি। কখনও সৈকতে ছাতার নিচে বসে একসঙ্গে সেলফি তুলছেন, আবার কখনও হেঁটে হেঁটে সাগরকন্যার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। তাদের উচ্ছ্বাস নজর কাড়ে সৈকতে বেড়াতে আসা অন্য পর্যটকদেরও।
ব্যতিক্রমী চার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা চারজনই মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বাসিন্দা। ভালোবাসা দিবসে তাদের ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের বন্ধুত্বকে অটুট করতে একসঙ্গে বেড়াতে এসেছেন কুয়াকাটায়।
চার বন্ধুর মধ্যে খোরশেদ আলম ও শামসুল হক স্কুলশিক্ষক ছিলেন। কয়েক বছর আগে তারা অবসরে গেছেন। অন্য দুজনের মধ্যে মনজুরুল আলম খান পল্লী চিকিৎসক এবং মোকসেদুর রহমান প্রবাসী।
খোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘একই এলাকার হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব। কখনও মতের অমিল খুব একটা হয়নি। সুখে-দুঃখে একে-অপরের পাশে থেকে এ পর্যন্ত। ছোটবেলা থেকে আমাদের বন্ধুত্ব এখনও অটুট, মৃত্যু পর্যন্ত আমরা এমন থাকতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘চার বন্ধু মিলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। একসঙ্গে ঘুরতে, আড্ডা দিতে খুব উপভোগ করি। আমাদের প্রত্যাশা, মৃত্যুর আগে চার বন্ধু অন্তত সারাদেশের ঐতিহ্যবাহী জায়গাগুলো ঘুরে দেখবো।’
শামসুল হক বলেন, ‘সোমবার সকালে আমার কুয়াকাটায় এসে পৌঁছেছি। বিশেষ দিনটি একসঙ্গে চার বন্ধু মিলে কাটালাম। খুব উপভোগ করলাম।’
নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত বন্ধু যদি সব সময় পাশে থাকে, জীবনে আর কিছুর প্রয়োজন হয় না। জীবনে প্রকৃত একজন বন্ধু থাকাটা সবচেয়ে বড় সম্পদ।’