বরিশালে প্রায় ২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

করোনার চলমান তৃতীয় ঢেউ যেন উপচে পড়েছে বরিশালের স্বাস্থ্য বিভাগে। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে এই বিভাগে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ থেকে ৪০ এর মধ্যে থাকছে। কখনো কখনো আরো বেড়ে যায়। শুধু সাধারন মানুষই নয় করোনার ছোবল পড়েছে বরিশালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর। চলমান তৃতীয় ঢেউ অর্থ্যাৎ জানুয়ারি মাসে বিভাগে প্রায় ২ হাজার ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছে।

এছাড়া প্রতিদিন গড়ে অর্ধশতাধিক আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিভাগে সার্বিক চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়ার উপক্রম তৈরি হয়েছে। তবে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর কর্তৃপক্ষ বলছে করোনায় আক্রান্ত হলেও মানুষের সেবা প্রদান থেকে পিছ পা হচ্ছি না। স্ব স্ব হাসপাতালগুলোর ডাক্তার নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ২/৩ গুন বেশি কাজ করে তা সমাধান করছেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে একটু যে সমস্যা হয় না তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

জেলা সিভিল সার্জনদের তথ্য অনুযায়ী চলমান তৃতীয় ঢেউয়ে সব চেয়ে বেশি ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছে বরগুনা জেলায়। এই জেলায় আক্রান্ত প্রায় ১ হাজার জন। জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হয়েছে সব চেয়ে বেশি।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, কেউ আগে পিছে নেই। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সমানে আক্রান্ত হচ্ছে। অবস্থা এমন যে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তার পরও কোনো মতে চালিয়ে নিচ্ছি।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝালকাঠি জেলায় শুধু জানুয়ারি মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৩৪২ জন চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী। এছাড়া বরিশালে প্রায় ২০০ জন, পিরোজপুরে প্রায় ১০০ জন এবং পটুয়াখালীতে চলমান তৃতীয় ঢেউয়ে ৩০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন করেনায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি সংখ্যায় আক্রান্ত হলে তাদের মনোবল ভেঙে পড়ার শংকা রয়েছে। কারণ তাদেরও পরিবার পরিজন আছে। আর এমনটি হলে স্বাভাবিক ভাবেই তারা রোগীর চিকিৎসায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ফলে বিভাগে চিকিৎসা সেবা মারাত্নক ভাবে ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া এমনিতেই বরিশালে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা কম। পুরো বিষয়টি নিয়ে উধ্বর্তন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ভাবতে হবে।

বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, এটা সত্যি যে চলমান তৃতীয় ঢেউয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ডাক্তারসহ ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি যাই হোক সাধারণ মানুষের সেবা দেয়া হচ্ছে। যারা সুস্থ থাকেন তারা নিজ নিজ ডিউটির চেয়ে দুই তিন গুন কাজ বেশি করে পুশিয়ে নিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিভাগের এমন কোনো হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসার অভাবে সাধারণ মানুষ ফিরে গেছে এমন অভিযোগ আসেনি।