বরগুনায় ৩ লাখ মানুষের ভরসা ৩ চিকিৎসক

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

বরগুনার পাথরঘাটায় প্রায় ৩ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার ভরসা মাত্র ৩ জন চিকিৎসক। পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন চিকিৎসকের জায়গায় মাত্র তিনজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার সাইফুল হাসান।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৩১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেজিস্ট্রারভুক্ত চিকিৎসক রয়েছেন ৯ জন। তাদের মধ্যে ৪ জন ঢাকায় সংযুক্ত রয়েছেন গত আড়াই বছর ধরে। বাকি ৫ জনের মধ্যে দুজনের শরীরে করোনাভাইরাস হওয়ায় তাঁরা আইসোলেশনে রয়েছেন। মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই শ রোগী আউট ডোর ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

বর্তমানে এ উপজেলার প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের জন্য তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এতে করে যেমন চিকিৎসকেরা বিশ্রাম নিতে পারছে না অপরদিকে সেবা নিতে আসা রোগীরাও পাচ্ছে না তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ডাক্তার দেখাতে পারেননি অনেকেই। চিকিৎসক না থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন বিপাকে। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের মধ্যে কোনো ধরনের উদ্বেগ নেই, বলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান রোগীরা।

চরদুয়ানী এলাকার সত্তোরোর্ধ্ব রহমান মুসল্লি জানান, ‘এত বড় হাসপাতালে মাত্র তিন ডাক্তার! এটা কি স্থানীয় নেতারা দ্যাহেনা। খালি ভোটের সময় মুখ সুন্দর কথা কয়!

চিকিৎসা নিতে আসা আবিদা সুলতানা জানান, ‘একজন ডাক্তারের কাছে একদিনে এত রোগী দেখালে তাতে তো চিকিৎসা হবে না। ডাক্তারদের বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনাগ্রহ জানিয়ে একজন চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদের দুই সহকর্মী করোনা আক্রান্ত। এর মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। প্রতিদিন রোগী সংখ্যাও বাড়ছে। তবে পাথরঘাটায় দীর্ঘদিন চিকিৎসক সংকট থাকায় জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ইনডোর সব মিলিয়ে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ বলেন, ‘চারজন চিকিৎসক অন্যত্র সংযুক্ত থাকলেও পাথরঘাটা থেকে তাদের বেতন-ভাতা তুলছেন। তারা পাথরঘাটায় কর্মস্থল না থেকে স্থান দখল করে থাকবে আর এ কারণে নতুন চিকিৎসক সংযুক্ত হবে না, এটা হতে পারে না। তিনি তাদের সংযুক্তি বাতিল চেয়ে পদ খালি করার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, ‘অতি দ্রুতই সমস্যা সমাধানের জন্য জরুরি মিটিং করা হবে। পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ড. সাইফুল হাসান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকট রয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

ঢাকায় সংযুক্ত চারজন চিকিৎসকের সংযুক্তি বাতিলের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক দফা আবেদন করা হয়েছে। তবে করোনাকালীন সারা দেশে চিকিৎসক সংকট থাকায় সমস্যা হচ্ছে।