ইয়াবা ও পর্নোগ্রাফির পৃথক মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হয়েছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সমালোচিত সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা। ইয়াবা ও পর্নোগ্রাফি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মনিরের বিরুদ্ধে গত শনিবার সংশ্লিষ্ট আদালতের নিবন্ধন কর্মকর্তার কাছে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর নগরীর রূপাতলীতে মনির মোল্লার দখলে থাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) রেস্ট হাউজ থেকে মাদক ও পর্নোগ্রাফি উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করলেও মনির মোল্লা প্রভাব খাটিয়ে এজাহার থেকে তার নাম বাদ দিয়েছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জসিমউদ্দিন গত শনিবার আওয়ামী লীগ নেতা মনির মোল্লাসহ মোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেন। মনির মোল্লাকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ৪ নম্বর এবং পর্নোগ্রাফির মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রের অপরাপর আসামিরা হলো বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম তালুকদার, আজিজুল হক, নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের নাসির মোল্লা, নাসির খান, সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের মিলন মিয়া, কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা সৈয়দ মোর্শেদুর রহমান, রত্ন বড়ুয়া, জাহেদ হোসাইন, ঝালকাঠী জেলার রোকসানা বেগম, দিনাজপুর জেলার আব্দুস সালাম ও মো. সোহেল।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, অভিযানের সময় ওজোপাডিকোর’র রেস্ট হাউজ থেকে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে মনির মোল্লার নাম প্রকাশ করে। তারা জানায়, মনির মোল্লা নেপথ্যে থেকে ওই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। ওই জবানবন্দীর ভিত্তিতে অভিযোগপত্রে তাকে আসামি করা হয়েছে।
জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর রূপাতলীতে ওজোপাডিকোর রেস্ট দখল করে সেখানে তার আস্তানা গড়ে তোলে। গত ২২ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ওই আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ৪৫২ পিস ইয়াবা এবং পর্নোগ্রাফির সিডিসহ পুলিশ কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম ও কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। ওই সময়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করলেও অদৃশ্য প্রভাবের মুখে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যম চেপে গেলেও একমাত্র বাংলাদেশ প্রতিদিন সংবাদ প্রকাশ করে। এছাড়া গত ৬ ডিসেম্বর নগরীর রূপাতলী এ. ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর বিএনপি নেত্রী সেলিনা বেগমকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে মনির মোল্লার বিরুদ্ধে। মনির মোল্লার এহেন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিব্রত এখানকার আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা।