করোনাকালে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে শতভাগ সফলতা অর্জন করা ১৩ ব্যাংক ও চার আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে প্রথম ধাপে যারা সিএসএমই ঋণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের হুঁশিয়ার করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আয়োজিত ব্যাংকার্স সভায় তাদের পুরস্কৃত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। সভা শেষে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) চলতি মূলধন সুবিধার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ গঠন করা হয়েছিল। এ তহবিলের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। তবে একজন গ্রাহক দিচ্ছেন ৪ শতাংশ আর বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিচ্ছে।
এ প্রণোদনা প্যাকেজ শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য যাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে- অগ্রণী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। বেসরকারি ব্যাংকগুলো হচ্ছে ইউসিবিএল, প্রিমিয়ার, উত্তরা, প্রাইম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মধুমতি, ব্যাংক এশিয়া, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, ইস্টার্ন ও ব্র্যাক। এছাড়া চার আর্থিক প্রতিষ্ঠান হলো আইপিডিসি, আইডিএলসি, লংকাবাংলা ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স।
ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। দুই বছর পর এ সুবিধা উঠিয়ে নিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিসেম্বরের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপির বাইরে ছিলেন গ্রাহক। তবে বিশেষ এ সুবিধা উঠানোর ফলে ডিসেম্বরের পরে ঋণ পরিশোধ না করলেই তিনি খেলাপিতে পরিণত হবেন।
২০২১ সালে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপির বাইরে ছিলেন গ্রাহক। বেশিরভাগ গ্রাহকই এই টাকা পরিশোধ করেছেন। কিছু গ্রাহক এখনও নতুন সুবিধার আশায় রয়েছে। কিন্তু এ সুবিধা আর বাড়ানো হবে না।
তবে ক্ষুদ্র গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাত্র ১৫ শতাংশ অর্থের মাধ্যমেই খেলাপি হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। এখানে বিশেষ সুবিধা হিসেবে আরও রাখা হয়েছে এক দশমিক ৫০ শতাংশ প্রভিশনে ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ। এ সুবিধা শুধু করোকালীন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য।
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংকখাতে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য গভর্নর বরাবর আবেদন পাঠিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআিই। এফবিসিসিআই চিঠিতে জানায়, করোনায় ব্যবসায়ীরা এখনও ভয়াবহ অবস্থা পার করছেন। তাই ২৫ শতাংশ পরিশোধের শর্ত শিথিল করে ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের ওই দাবিতে সায় দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।