মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থীর পরাজয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঈর্ষান্বিত হয়ে সরকারি একটি টিউবওয়েল খুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বাঘড়ায় নৌকার সমর্থক মিনু বেগমের বিরুদ্ধে এই টিউওবয়েল খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা যায়, কয়েকটি পরিবারের প্রয়োজনীয় পানি পানের সুবিধার্থে বাঘড়া ইউপির তত্ত্বাবকধানে টিউবওয়েলটি স্থাপন করা হয়েছিল।
কিন্তু গত ১১ নভেম্বর নির্বাচনের দিন প্রতিবেশীদের দমাতে নৌকা ফেল করার কারণে মিনু বেগম টিউবওয়েলটি খুলে নেন। টিউবওয়েলটি না থাকায় পরিবারগুলো বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে সমর্থন করেন মিনু বেগম। রহস্যজনক কারণে নির্বাচনের আগের দিন নৌকা পাস না করলে কলটি খুলে নেওয়ার হুমকি দেন মিনু।
ফলাফল প্রকাশের পর টেলিফোন প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী আবু আল নাসের তানজিল বিজয়ী হওয়ার ঘোষণার পর গত বৃহস্পতিবার রাতেই মিনু কলটি খুলে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী প্রতিবেশী মো. এরশাদ বলেন, ‘নির্বাচনের দিন রাত ৮টার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে মিনু বেগম কলটি খুলে নেন। এর আগে মিনু বেগম হুমকি দেন নৌকা ফেল করলে তোদের এই টিউবওয়েল ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
পরের দিন এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে জানিয়েছি। তিনি আশ্বস্ত করেন, মিনুকে তিনি টিউবওয়েলটি ফেরত দিতে বলবেন। এখনো কলটি স্থাপন করা হয়নি। আমরা প্রয়োজনীয় খাবার পানি পাচ্ছি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশুদ্ধ পানির অভাব দূরীকরণে কয়েকটি পরিবারের সুবিধার্থে টিউবওয়েলটি মিনুর জায়গায় স্থাপন করা হয়। মিনুর সন্দেহ প্রতিবেশীরা তার কথায় নৌকা মার্কায় ভোট দেননি।
তাই মিনু বেগম প্রতিহিংসাবশত টিউবওয়েলটি খুলে নেন। আরও জানা যায়, এলাকায় মিনু বেগমের বিরুদ্ধে মাদক কেনা-বেচার তথ্য পাওয়া যায়। মাদক সংক্রান্ত ঘটনায় এর আগে মিনু একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
টিউবওয়েলের প্রসঙ্গে মিনু বেগম বলেন, ‘এটা সরকারি টিউবওয়েল নয়। নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যান আমাকে ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছেন। তাই টিউবওয়েলটি খুলেছি।’ এ ছাড়া এলাকায় মাদক কেনা-বেচা প্রসঙ্গে মিনু বেগম বলেন, ‘অনেক আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম। এখন মাদকের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’
এ বিষয়ে বাঘড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যক্তিগত হোক বা সরকারি হোক জনগণের স্বার্থে টিউবওয়েলটি বসানো হয়েছে। যতদূর মনে পরে ২-৩ বছর আগে ওই বাড়িতে একটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। এই টিউবওয়েলটি খুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। আমি বিষয়টি সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।