বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলা ও পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বরিশাল-পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিন উদ্দিন কালুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২০ আগস্ট) গভীর রাতে নগরের রূপাতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
একই সঙ্গে আরও চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, দুই মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ১৩ জনকে এবং শনিবার আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার দুই নম্বর আসামি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইদ আহমেদ মান্নাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শনিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি ইমরান খান।
এর আগে শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ এলাকার বোনের বাসা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন মান্নার বড় বোন কানিজ ফাতেমা।
ঘটনার পর গ্রেফতারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ বাবু, জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শাহরিয়ার বাবু প্রমুখ।
গত বুধবার (১৮ জুলাই) রাতে নগরীতে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে বরিশালে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ওইদিন রাতে সদর উপজেলা ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। এ সময় আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে আহত হন অনেকে। পুলিশ ও ইউএনও মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে। যাতে ৬০২ জনকে আসামি করা হয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে করা হয়েছে প্রধান আসামি।
অন্যদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ ৬০২ জনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে শনিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছেন বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিসিসির সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত বাবলুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল হাজবুন, রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার, পরিচ্ছন্ন বিভাগের পরিদর্শক মো. মাসুম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সিটি মেয়রের ওপর হামলা করে ইউএনও উল্টো তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর তারা সবাই গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছে। তাই মেয়রের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান বক্তারা।