বদলি করা হয়েছে চট্টগ্রামের আলোচিত ও নগরের ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিনকে। পুলিশ সদরদফতরের এক আদেশে তাকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) তথ্য নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আরফাতুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গতকাল (বুধবার) পুলিশ সদরদফতরের এক আদেশে ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিনকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। ওই আদেশে তাকে আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থল খুলনা রেঞ্জে যোগদানের জন্য ছাড়পত্র গ্রহণ করতে বলা হয়। অন্যথায় আগামী ২৬ আগস্ট থেকে তিনি তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন।
জানা গেছে, একজন ওসি হয়েও নানা উদ্ভাবনী ও মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য দেশজুড়ে আলোচিত ছিলেন ওসি মহসিন। তার উদ্যোগে ‘হ্যালো ওসি’ নামে একটি কর্মসূচি প্রশংসিত হয়েছে স্বয়ং পুলিশ বিভাগেই। পরবর্তীতে তার উদ্ভাবিত এই পুলিশি সেবা নগরের সবকটি থানায় তো বটেই, দেশের বিভিন্ন থানায় চালু হয়েছে। সেই কর্মসূচির মাধ্যমে থানার ওসি হাজির হন বিভিন্ন এলাকায়। সেখানে সাধারণ মানুষ সরাসরি ওসির সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন সমস্যা হবে সমাধান করতে পারেন।
এছাড়া গতবছর করোনার সময়ে কোতোয়ালি থানায় দায়িত্ব পালনকালে নানামুখী মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে প্রশংসিত হন ওসি মহসিন। গানে গানে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি ওষুধ নিয়ে ছুটে গেছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। আবার বাজার করতে মানুষের যাতে বের হতে না হয়, সে জন্য পুলিশের গাড়িতে করে বাজার নিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন মানুষের ঘরে ঘরে।
ডবলমুরিং থানায় পদায়নের পর সর্বশেষ রমজানে মাসব্যাপী নিম্নআয়ের মানুষের জন্য তিনি ফ্রি ইফতার অ্যান্ড সাহরির নামে একটি বিনামূল্যের দোকান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যেখান থেকে হাজার হাজার মানুষ বিনামূল্যে ইফতার ও সাহরি নিতে পেরেছেন। গত ৪ আগস্ট থেকে থানা এলাকায় নৈশপ্রহরীদের প্রশিক্ষণের জন্য চালু করেছেন ‘নৈশ বিদ্যালয়’। যেখানে তাদের শেখানো হচ্ছে বিশেষ পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করে পুলিশের সহযোগিতা নেয়া যাবে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় প্রসূতিকে নিজের গাড়িতে হাসপাতালে পৌঁছানো, থানা এলাকায় লোকজনের জন্য বিনামূল্যের অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রতিষ্ঠা ও করোনাকালে বিভিন্নরকম সচেতনতা কর্মসূচিসহ মানবিক কর্মকাণ্ডে চট্টগ্রামজুড়ে আলোচনায় ছিলেন ওসি মহসিন।
জানা গেছে, ওসি মহসিনের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। তিনি ২০০১ সালে ক্যাডেট উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি চট্টগ্রাম নগর পুলিশে যোগ দেন।
২০১১ সালে এসআই থেকে পরিদর্শকে পদোন্নতি হয় তার। এরপর দেড়বছর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করেন। ফিরে এসে তিনি আবারও চট্টগ্রাম নগরের একাধিক থানায় দায়িত্ব পালন করেছেন।