কঠোর লকডাউন শিথিলের পর বরিশালে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। শহরের দোকানপাট ও বিপণিবিতানে ক্রেতা সমাগম বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছে।
প্রধান সড়ক ও ফুটপাত অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই পথচারীরা চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। চলছে সব ধরনের গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত যান।
হঠাৎ যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রোববার সড়কের মোড়ে মোড়ে ছিল যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদ সামগ্রী কেনাকাটায় করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পবিত্র ঈদ উল আযহাকে কেন্দ্র করে নগরীর চকবাজার, গির্জামহল্লা, কাঠপট্টি, পদ্মাবতী, বাজার রোড, ফরিয়াপট্টি, সদর রোডের দোকানপাট ও বিপণিবিতানে ক্রেতা সমাগম ছিল অত্যাধিক।
ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব পুরোপুরি অমান্য করে মাস্ক না পরেই ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
তাদের মধ্যে কারও মাস্ক ছিল পকেটে, থুতনিতে বা হাতে।
পাশাপাশি নগরীর গণপরিবহণের অধিকাংশ চালক ও যাত্রীও মানেননি স্বাস্থ্যবিধি।
নগরীর সড়কগুলোর ফুটপাত দখল করে অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হরেক পণ্য বিক্রি করায় ফুটপাত সংকুচিত হয়ে গেছে।
এতে করে পথচারীরা বাধ্য হয়ে গাদাগাদি করে চলাচল করেছেন। তাছাড়া প্রধান সড়কগুলোর সড়ক অবৈধ পার্কিংয়ে দখল হয়ে থাকায় সড়কে জট বেড়েছে।
নগরীর সদর রোড, গির্জামহল্লা, কাঠপট্টি ও চকবাজারের অধিকাংশ স্থানসহ মোড়ে মোড়ে ছিল অসহনীয় যানজট।
হঠাৎ করে যানজট বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
নগরীর বাসিন্দা তারেক হাওলাদার জানান, রোববার দুপুরে মোটরসাইকেলে চড়ে নগরীর চকবাজার থেকে গির্জামহল্লা পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে ২০ মিনিট সময় লেগেছে।
যা অন্যান্য দিন সর্বোচ্চ তিন মিনিটের মধ্যেই পৌঁছানো যায়।
নগরীর পুরানপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আবদুর রহমান মিয়া জানান, নাতিদের জন্য ঈদ পোশাক কিনতে বের হয়ে এত লোকসমাগম দেখে চরম বিপাকে পড়েছেন।
তবুও শিশুদের আনন্দের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা কেনাকাটা করেছেন তিনি।
বরিশাল চকবাজার, কাঠপট্টি, পদ্মাবতী ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনায় দোকান মালিকরা বদ্ধপরিকর।
দোকান মালিক-কর্মচারীদের সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া কিছু সংখ্যক গ্রাহক মাস্ক পরতে চান না, পরতে বললে বাকবিতণ্ডায়ও জড়াচ্ছেন অনেকেই।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যক্তিগত সচেতনতার বিকল্প নেই।
তাই নিজ ও পরিবারের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় সকলকে নিয়মানুযায়ী মাস্ক পরার পাশাপাশি জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার নির্দেশিত বিধি নিষেধ মানতে হবে। অন্যথায় করোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, নগরীতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না।
জেল-জরিমানা করে নাগরিকদের মাস্ক পরানো কঠিন কাজ। তাই স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সব নাগরিকের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।