বরিশাল নগরীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে এমআরআই পরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন এক রোগী।
মো. আরিফুর রহমান নামে ওই রোগী জানিয়েছেন, গত শনিবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এ অভিযোগ জানান তিনি।
তারপর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দেয়।
এই হুমকি পাওয়ার পর শুক্রবার কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
আরিফুর রহমান জানান, ঘাড়ে সমস্যার কারণে প্রায় পাঁচ মাস আগে ল্যাবএইডের ডাক্তার নূরুল হক মিয়াকে দেখান তিনি।
নূরুল হক তাকে ওষুধের পাশাপাশি ঘাড়ের এমআরআই (ম্যাগনেটিক রিসোন্যান্স ইমেজিং) করাতে বলেন।
এ জন্য গত ১২ জুন তিনি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান।
সেখানে এমআরআই বাবদ ৮ হাজার এবং এক্সট্রা স্ক্রিনিং চার্জ হিসেবে ২ হাজার টাকা চাওয়া হয়।
এই ১০ হাজার টাকা থেকে ডাক্তার নূরুল হকের অনুরোধে ২ হাজার ৫০০ টাকা ডিসকাউন্ট দেয়া হয়। তারপর তিনি এমআরআই করান।
এই রোগী জানান, এমআরআই টেস্টের টাকার পরিমাণ নিয়ে সন্দেহ হলে তিনি মেডিনোভা, ল্যাবএইডে খোঁজ নেন।
জানতে পারেন, এই পরীক্ষার চার্জ ৭ হাজার টাকা। এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ করেন।
আরিফুর রহমান জানান, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তালিকা অনুযায়ী এই পরীক্ষার রেট ৭ হাজার টাকা। আর পপুলার নিচ্ছে ১০ হাজার টাকা।
তারা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তালিকা না মেনে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজারের কাছে যান।
এরপর তারা ভুল স্বীকার না করে উল্টো তাকে চাঁদাবাজ আখ্যা দেয়ার পাশাপাশি তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
আরিফুর রহমানের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, তাদের চারটি ফ্লোরে রিসিপশনের সামনে একাধিক তালিকা টানানো আছে।
সেখানে ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তালিকাও আছে।
তবে বরিশালে তিনটি ল্যাবে এমআরআই হয় বিধায় ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তালিকায় এমআরআই পরীক্ষার টাকা নির্ধারণ করা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সভাপতি কাজী মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শুনেছি। আমাদের তালিকায় এমআরআই রেট নাই।
ল্যাবএইড ও মেডিনোভা আমার সঙ্গে আলোচনা করলে আমি তাদের সমন্বয় করে এমআরআইয়ের মূল্যতালিকা যেটা নির্ধারণ করা আছে, সেটা লিখে দিতে বলেছি। পপুলার বেশি টাকা নিলে সেটা প্রতারণার শামিল।’
এ সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
বরিশাল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহ সোয়াইব রহমান বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করছি।’
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘বিষয়টি প্রতারণার শামিল। ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি-সম্পাদক এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেন, তা দেখার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’