রত্না আক্তার। ঝিনাইদহ সদরের একজন তরুণ সংগ্রামী নারী। সংসারের পাশাপাশি একদিকে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে ঘরে বসেই অনলাইনে ব্লগিং করে উপার্জন করছেন অর্থ। তিনি ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
Imran Ratna Vlog চালিয়ে তার ফেজবুক পেজে বর্তমানে ফলোয়ার ছাড়িয়েছে তিন লাখের অধিক। তিনি ঘরে বসে নানা রকম সমাজ-সামাজিকতা, সচেতনতা, ইতিহাস, জেলার ঐতিহ্য ও প্রকৃতির নানা দৃশ্য ধারণ করে তার ফেজবুকে নিয়মিত ভিডিও আপলোড ও লাইভ করে সারাবিশ্বে পরিচিতি পেয়েছেন। এ ব্লগিং জগতে যখন তিনি আসেন, তখন তার স্বজন, পরিচিত মানুষসহ অনেকে নানারকম বাজে কমেন্ট করতে থাকেন।
প্রতিনিয়ত ফেসবুক পেজে ভিডিও পোস্ট করলেই সমাজের এক শ্রেণির মানুষ তাকে নিয়ে ও তার স্বামীর পরিবারসহ স্বজনদের কাছে নানা অভিযোগ দিতে থাকেন। নানা সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে চলছে তার সংসার জীবন। সেইসঙ্গে পড়াশুনা ও ব্লগিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখে নারী সমাজকে এগিয়ে নিতেই তিনি ফেসবুক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রত্না আক্তার মনে করেন, নারীরা আর সমাজে অবহেলিত থাকবে না। ইচ্ছাশক্তি ও চেষ্টার মাধ্যমেই সফলতা আসবে। সে কারণে তিনি হাল না ছেড়ে স্বামীর ও শ্বশুড় বাড়ির পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে রত্না বলেন, ঝিনাইদহ জেলা শহরের মোল্লা পাড়ার একটি কোচিংয়ের পরিচালক ও সমাজ সেবক ইমরান হোসেনকে দীর্ঘ সাত বছর আগে বিয়ে করি। প্রথমে সংসারের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাই। তারপর চিন্তা করি কিভাবে ঘরে বসে অনলাইনে বিজনেস করা যায়? মাথায় আসে অনলাইনে থ্রি-পিস নিয়ে ব্যবসা শুরু করবো। ফেসবুক পেজ খুলি, এটাই হয় আমার মার্কেটপ্লেস।
এসময় তার স্বামীসহ পরিচিত মানুষ তাকে উৎসাহ দিলে তিনি তখন ব্লগিং সম্পর্কে ধারণা পান। সে সময়ে তিনি লাকি সুমন ব্লগের কনটেন্টগুলো মনোযোগ সহকারে দেখে ইমরান রত্না নামের ব্লগ খুলে শুরু করেন। নানা বাধা প্রতিকূলতা পেরিয়ে স্বামীর সহযোগিতায় আজ প্রায় তিনলাখ ফলোয়ার তার পেজে।
তিনি আরও বলেন, সমাজে নারীর স্বাধীনতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিছু ঘৃণ্য চরিত্রের মানুষ। তারা সবসময় নারীকে খাটো করে দেখে ও নানা বিদ্রুপ করতে থাকে। প্রতিনিয়ত নানা মানুষের বাজে মন্তব্যগুলো শুনেও আমি লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বদ্ধপরিকর। ঘরে বসে ব্লগিং করলে কিছু মানুষ সেটি নিয়ে সমালোচনা বা বাজে মন্তব্য করবে, সেটি মাথায় নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। তবে সবাইতো আসলে খারাপ না। অনেকের উৎসাহ, ভালোবাসা পাওয়ার কারণে আমি একটু হলেও সফল। প্রথম দিকে কিছু মানুষের খারাপ কথা শুনে হতাশ হতাম, কষ্ট পেতাম। তবুও আমি হাল ছাড়িনি।
রত্না বলেন, আমি যখন লাইভ বা ভিডিও পোস্ট করেছি, সেটি মিলিয়নের ঘরে গিয়ে পৌঁছেছে। অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে আমি সফল কি না জানি না। পরিবারের সাপোর্ট নিয়ে সমাজের মানুষকে কিছু দিতে পারলে ব্লগিং লাইনে হবে আমার স্বার্থকতা। সবার সহযোগিতা কামনা করছি।