বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় মো. শাহ আলম খান (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৩ জুন) রাত ১২টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত শাহ আলম উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামের বাসিন্দা এবং খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মন্টু হাওলাদারের ভায়রা হন।
নিহত শাহ আলমের স্বজনরা জানান, বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তিনি কমলাপুর ও বড়দুলালী গ্রামের সীমান্তবর্তী বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় যান।
এ সময় খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ফিরোজ মৃধার সমর্থক জাকির মৃধা, সোবাহান মৃধা ও এনায়েত মৃধার নেতৃত্বে ৮-১০ জন শাহ আলম খানের ওপর হামলা চালান।
হামলাকারীরা তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে শাহ আলম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা পালিয়ে যান।
পরে উদ্ধার করে শাহ আলমকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বরিশাল শের-ই-বাংলা বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারিতে শাহ আলম খান অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে শাহ আলম খান মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে ২১ জুন দুপুর ১২টার দিকে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে সদস্য প্রার্থী ফিরোজ মৃধা ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী সদস্য প্রার্থী মন্টু হাওলাদার এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় ১৫-১৬টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বোমার বিস্ফোরণে ফিরোজ মৃধার সমর্থক মৌজে আলী মৃধা নামে এক বৃদ্ধ (৬৫) নিহত হন।
এছাড়া সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরও পাঁচ-ছয়জন আহত হন। সোমবার রাতে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে সদস্য (মেম্বার) পদে মোরগ প্রতীক নিয়ে ফিরোজ মৃধা নির্বাচিত হন। পরাজিত হন টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী মন্টু হাওলাদার।
অন্যদিকে ওই দিন রাতে বোমা হামলায় নিহত মৌজে আলী মৃধার ছেলে নজরুল ইসলাম মৃধা বাদী হয়ে বিজয়ী প্রার্থী ফিরোজ মৃধা, পরাজিত প্রার্থী মন্টু হাওলাদারসহ ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরে ফিরোজ মৃধা, তার কর্মী ইমন হোসেন ও নয়ন মৃধাকে এ মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ।