ইভ্যালিসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে ক্রেতাদের কাছে পণ্য ডেলিভারির পরই টাকা পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের এসব লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডাব্লিউটিও সেল) হাফিজুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা’ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে একটি এসওপি সার্ভিস ডেভেলপ করা হবে। যাতে পণ্য ডেলিভারির আগে পেমেন্ট নেয়া না হয়। ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ড যাদের আছে, তারা পেমেন্ট কন্ট্রোল করবে।’
অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান বলেন, ‘পেমেন্ট দেয়ার পর পণ্য ডেলিভারি হলে তারা যদি মেসেজ পায়, তারপর সেই পেমেন্ট কনফার্ম করবে। এটাই মোটামুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই এসওপি ডেভেলপ করা হবে। ইমিডিয়েট বিষয় হলো- পেমেন্ট সিস্টেম কন্ট্রোল করা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে।’
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য তাদের কাছ থেকে জামানত রাখার কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, আলোচনাও হয়নি।’
এমএলএম কোম্পানির মতো ঝুঁকিতে থাকা ই-কমার্সের কোনো প্রতিষ্ঠান পালিয়ে যেতে পারে কি-না এমন প্রশ্নে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলোচনা হয়নি, এটি দেখা হবে। তবে ঝুঁকি আছে।’
ট্যাক্স-ভ্যাট ফাঁকির কোনো অভিযোগ আছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে ট্যাক্স সংক্রান্ত কিছু ছিল না, এটি দেখিনি। তাদের সম্পদের চেয়ে দায় বেশি, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
ক্রেতাদের পণ্য কেনা নিয়ে কোনো বার্তা আছে কি-না প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘ক্রেতাদের সতর্ক থাকতে হবে। যারা অস্বাভাবিক অফার দেয়, তারা সন্দেহজনক আচরণ করতে পারে। তারপরও আমরা আশা করি- তারা যেন অনলাইনে কার্ড বা বিকাশ-নগদের মতো সিস্টেমে পেমেন্ট করে, তাহলে পেমেন্ট কন্ট্রোল করা যাবে। এর বাইরে ভিন্ন পন্থায় যদি তারা অ্যাডভান্স দিয়ে দেয়, তাহলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে।’
আইনিভাবে তাদের ব্যবসাকে কোনো সিস্টেমে আনা যাবে কি-না জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি এসওপি ডেভেলপ করছি, সেটি ফলো করার জন্য বলা হবে। এছাড়া অনেকগুলো আইন আছে, প্যানাল কোর্ট আছে, ভোক্ত অধিকার সংরক্ষণ আইন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তো বহাল আছেই। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিনিধি, রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি, বিটিআরসির প্রতিনিধি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রতিনিধি, ই-ক্যাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।