এ যেন নব্বইয়ের দশকের মোহামেডান ও আবাহনীর লড়াই। মাঠের বাইরে উত্তেজনাটা আগের মতো না থাকলেও এদিন ঠিকই মাঠ উত্তাপ টের পাওয়া গেল। আর এর সবকিছুই এলো সাকিব আল হাসানকে ঘিরে। মাঠে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হলেন। স্বল্প সংখ্যক দর্শকের সঙ্গেও চলল উত্তেজনা। আর এমন ম্যাচে জয় পেয়েছে মোহামেডান। ২০১৫-১৬ মৌসুমের পর এই প্রথম জয় পেল দলটি।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার আবাহনী লিমিটেডকে বৃষ্টি আইনে ৩১ রানে হারিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৫ রান করে তারা। জবাবে ডি/এল পদ্ধতিতে আবাহনীর লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯ ওভারে ৭৬। কিন্তু ৬ উইকেটে ৪৪ রানের বেশি করতে পারেনি তারা।
জয় পরাজয় ছাপিয়ে এদিন ম্যাচের মূল আলোচনা ছিল সাকিবকে নিয়েই। ব্যাটিংয়ে নেমে ছন্দে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। তার ব্যাটে চড়েই লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি। তবে বোলিংয়ের সময় মাঠে তার আচরণে হতবাক সবাই।
তবে লক্ষ্য তাড়ায় আবাহনীর শুরুটাই ছিল ভয়াবহ। ৩ বলে ২টি উইকেটে তুলে নেন শুভাগত হোম। মোহাম্মদ নাঈম ও একেএস স্বাধীনকে বোল্ড করে দেন এ অফস্পিনার। পরের ওভারে এসে আফিফ হোসেনকেও বিদায় করেন শুভাগত। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি।
যতো নাটক হয় পঞ্চম ওভারের শেষ বলে। দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডাব্লিউর আবেদন করেন সাকিব। কিন্তু আম্পায়ার তা নাকচ করে দেওয়া ক্ষেপে যান এ দেশ সেরা অলরাউন্ডার। লাথি মেরে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন। এমনকি আম্পায়ারকেও শাসান।
পরের ওভারের পঞ্চম বলের সময় নামে বৃষ্টি। কিন্তু ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় ফের স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন সাকিব। তবে সতীর্থরা তাকে শান্ত করে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় দর্শকদের সঙ্গেও বাগবিতণ্ডা হয়ে যায়। আবাহনীর রান তখন ৩ উইকেটে ৩১।
প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পর (৮১ মিনিট) বৃষ্টি থামলে আবাহনীর লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯ ওভারে ৭৬ রান। অর্থাৎ শেষ ১৯ বলে ৪৫ রান। তবে সে লক্ষ্যে মাত্র ১৩ রান যোগ করতে পারে তারা। ৩ রান যোগ করতেই বোল্ড নাজমুল হোসেন শান্ত। আর ৮ রান যোগ করতে ফিরে যান মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে মোহামেডান। পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৩৭ রান করেন এ আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা আব্দুল মজিদ। এরপর ইমন ফিরে গেলে ইরফান শুক্কুরের সঙ্গে করেন ২৪ রানের জুটি। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। পাওয়ার প্লেতে আসে ৩৯ রান।
এরপর মজিদের বিদায়ের পর মাত্র ৭ রানের ব্যবধানে ৩টি উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে মোহামেডান। এ সময় অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মাহমুদুল হাসান। গড়েন ৪৬ রানের জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় ঐতিহ্যবাহী দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব। ২৭ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২২ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল। ইমনের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। আবাহনীর পক্ষে একেএস স্বাধীন ২৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান। ১৭ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট পান তানজিম হাসান সাকিব।