মাদক মামলায় ৬ বছরের প্রকৃত সাজা প্রাপ্ত আসামির নাম হাসিনা আক্তার (২৫)। এই আসামি মামলার সাজা হওয়ার আগেই আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে গেছেন।
কিন্তু পুলিশের ভুলে প্রকৃত আসামির স্থলে গত দেড় বছর ধরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা ভোগ করছেন হাসিনা বেগম (৪০)।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি আদালতের নজরে এনেছেন চট্টগ্রামের তরুণ আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ। গতকাল ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শরীফুল আলম ভূঁঞার ভার্চুয়াল আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে ঘটনা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম আদালতের তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ মার্চ কারাগারে যান হাসিনা আক্তার। প্রায় ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি থাকার পর হাসিনা আক্তার জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যান। হাসিনার আক্তারের অনুপস্থিতিতে মাদক মামলায় তার ৬ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। আদালতের সাজা পরোয়ানা মূলে দেড় বছর আগে হাসিনার আক্তারের স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী একই এলাকা থেকে টেকনাফ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে হাসিনা বেগমকে (৪০)। কোনো মামলার আসামি না হয়েও ৩ সন্তানের মা হাসিনা বেগমকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার বলে আদালতে উপস্থাপন করে পুলিশ। এরপর থেকেই হাসিনা বেগম ভুল আসামি হিসেবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। হাসিন বেগমের স্বজনরা দীর্ঘদিন ধরে আদালতে ছুটতে ছুটতেও কোনো কুল কিনারা করতে পারেননি।
আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, ভুল আসামি কারাগারে সাজা ভোগ করার তথ্য পেয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আদালতের সামনে উপস্থাপন করা হয়। এই ঘটনায় টেকনাফ থানা পুলিশও তাদের ভুল স্বীকার করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আদালত চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে ২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়া হাসিনা আক্তার ও বর্তমানে কারাগারে থাকা হাছিনা বেগম একই আসামি কিনা এ বিষয়ে ছবিযুক্ত বালাম দেখে ব্যক্তিগতভাবে পরীক্ষা করে প্রতিবেদেন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রাপ্তিসহ আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য অপেক্ষমান রেখেছেন আদালত।