করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে ভারতে। একদিকে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ, অন্যদিকে রোগীর চাপে ভরে গেছে হাসপাতালের শয্যাগুলো। তার ওপর মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠেছে ওষুধ সংকট। করোনা চিকিৎসায় দেশটিতে রেমডেসিভিরের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কোম্পানিগুলো সেই চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে কালোবাজারে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধটি।
গত শনিবার মধ্য প্রদেশে রেমডেসিভির কালোবাজারির দায়ে এক চিকিৎসকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চার পিস ওষুধও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্যমতে, উদ্ধার হওয়া ওষুধগুলো বাংলাদেশে তৈরি। সেগুলো কালোবাজারে প্রতি পিস ২০ হাজার রুপি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছিল।
ভারতের ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালোবাজারিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ওষুধগুলোর গায়ে ‘রেমিভির ১০০’ লেখা ছিল, যা রেমডেসিভির ইনজেকশনের একটি ব্র্যান্ড। আর এটি উৎপাদন করে বাংলাদেশের এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস।
ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, কিছু লোক বেআইনিভাবে চড়া দামে রেমডেসিভির বিক্রির চেষ্টা করছে বলে খবর পায় তারা। তখন ক্রাইম ব্রাঞ্চ ছদ্মবেশী ক্রেতা সেজে কালোবাজারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। চুক্তি হয়ে গেলে এক পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে ওধুষ আনতে যান। তার হাতে একটি ইনজেকশন তুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রেতা আটক করা হয়।
ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি গোপাল ধাকাড় জানান, আটক ব্যক্তির নাম সামি খা (৩০)। তিনি ১৮ হাজার রুপিতে রেমডেসিভির বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন। অথচ একদিন আগেই ভারতীয় সরকার এর দাম ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৪৯০ রুপি নির্ধারণ করে দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা সামি খানের তিন সহযোগী আখলাখ খান (২৪), নোমান খান (৩০) এবং এহসান খানকেও গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে এহসান খান পেশায় চিকিৎসক।
অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, মূলত নোমান খানই রেমডেসিভির ইনজেকশন এনেছিলেন। তার কাছ থেকে অন্য তিনজন প্রতি পিস সাত হাজার রুপি করে কিনে নেন এবং সেগুলো অন্তত ১৮ হাজার রুপিতে বেচতে চাচ্ছিলেন।
ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, ওষুধগুলো বৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে আমদানি হয়েছিল নাকি আন্তর্জাতিক কালোবাজারি চক্রের হাত ঘুরে এসেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। সেগুলো গত শুক্রবার ভোপালের সরকারি হামিদিয়া হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া ৮৬৩ ইনজেকশনের অংশ কি না তা-ও খুঁজে দেখবে পুলিশ।