মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পবিত্র রমজান শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার থেকে। বাংলাদেশসহ এশীয় অঞ্চলে রোজা শুরু বুধবার থেকে। পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে মহিমান্বিত এ মাসজুড়ে সিয়াম সাধনা বা রোজা পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।
রমজানে দিনের বেলা পানিপানসহ সব ধরনের খাদ্যগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন রোজাদাররা; মুখের ভাষা, চোখের নজর সংযত রাখবেন; এড়িয়ে চলবেন শারীরিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো। ইতোমধ্যে সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয়ে গেছে সেই ইবাদত, শেষ হবে ইফতারের মাধ্যমে।
সূর্যাস্তের সময় ইফতারে প্রায় সকলেই খেঁজুর খেয়ে থাকেন। বহু বছর ধরে এটি হয়ে উঠেছে ইফতারির অন্যতম উপাদান। খেঁজুর না থাকলে যেন মনে হয়, কিছু একটা অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে!
শুকনো হোক বা তাজা, ইফতারিতে খেঁজুর চাইই চাই! শুধু মনের স্বস্তিই নয়, এর রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। খেঁজুর ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবারে ভরপুর। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
খেঁজুরে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফ্রুক্টোজ। এটি একধরনের প্রাকৃতিক চিনি যা শুধু ফলের মধ্যেই পাওয়া যায়। খেঁজুর শরীরে প্রচুর শক্তি জোগায়, বিশেষ করে দিনভর রোজা রাখার পর এটি খাওয়া খুবই উপকারী।
খেঁজুর বিভিন্ন আকার, আকৃতি ও রঙের হয়ে থাকে। কিন্তু জানেন কি, আপনার বাড়িতে থাকা খেঁজুরটি কোথা থেকে আসছে?
খেঁজুর উৎপাদনে শীর্ষে কারা
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মোতাবেক, প্রতি বছর বিশ্বে অন্তত ৯০ লাখ মেট্রিক টন খেঁজুর উৎপাদিত হয়। সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের মতো উষ্ণ ও গ্রীষ্মপ্রধান এলাকায় এর উৎপাদন ভালো হয়।
সবচেয়ে বেশি খেঁজুর উৎপাদিত হয় মিসরে। বিশ্বের প্রতি পাঁচটি খেঁজুরের একটি বা প্রায় ১৮ শতাংশ খেঁজুরই আসে আফ্রিকা-মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যবর্তী এই দেশ থেকে।
দ্বিতীয় অবস্থানে সৌদি আরব। বিশ্বের প্রায় ১৭ শতাংশ খেঁজুর উৎপাদিত হয় সেখানে।
এরপর ইরান। বিশ্বের ১৫ শতাংশ খেঁজুর আসে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি থেকে।
এরপরে রয়েছে যথাক্রমে আলজেরিয়া, ইরাক, পাকিস্তান, সুদান, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তিউনিশিয়া।
খেঁজুর নিয়ে আরও কিছু তথ্য
পৃথিবীতে হাজার হাজার বছর ধরে খেঁজুরের চাষ চলছে। এর গাছ পুরুষ ও স্ত্রী দুই ধরনের হয়। এর মধ্যে শুধু স্ত্রী গাছেই খেঁজুর ধরে।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক একটি খেঁজুর গাছে প্রতি মৌসুমে ১০০ কেজি পর্যন্ত ফল হতে পারে, সংখ্যার দিক থেকে ধরলে সেটি দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার।
আজওয়া হচ্ছে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দামী খেঁজুর। এটি সৌদি আরবের মদিনায় উৎপাদিত হয়।