মরিয়ম ফিরে পাবে স্বামীর অধিকার !

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

বরগুনার বেতাগীতে নির্যাতিতা অসহায় মরিয়ম আক্তার পাসন্ড স্বামী ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেও আজও প্রতিকার পাননি। আদালত থেকে ডিগ্রী ও সমন জারি হলেও বিচার প্রার্থী হতদরিদ্র পরিবারের হওয়ায় নির্যাতনকারী এখনো ধরা-ছোয়ার বাইরে। ফলে নির্যাতিতা মরয়িমসহ গোটা পরিবার হতাশায় ভুগছেন।

 

জানা গেছে, তালতলী উপজেলার কড়াইয়া বাড়িয়া গ্রামের মো. রুহুল আমিনের ছেলে ইসমাইল হোসেনের সাথে বেতাগী পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ছোহরাব গোমস্তার মেয়ে মরিয়ম আক্তার (২২)‘র সাথে ২০১৫ সালে দু‘ লাখ টাকা দেন মোহরে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বাবা হতদরিদ্র হয়েও এ সময় ধার দেনা করে উপহার হিসেবে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামালসহ মেয়েকে শ^শুর বাড়িতে তুলে দেয়।

 

বিয়ের প্রথম ৬ মাস ভালোই কেটে ছিলো। বলা যেতে পাওে ইসমাইল ও মরিয়মের সুখের সংসার। এর কিছু দিন যেতে না যেতেই তার স্বামী ইসমাইল হোসেন যৌতুক হিসেবে আরো টাকা পয়সা দাবি করে।

 

মেয়ের ভবিষৎ সুখের কথা চিন্তা করে বাবা স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ব্রাক থেকে ঋণ হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন জামাতা ইসমাইলকে প্রদান করে।

 

এর পরেও ইসমাইল মাড়াই মেশিন ক্রয়ের নামে আরো ১ লাখ টাকা দাবি করে। শ্বশুড় ছোহরাব গোমস্তা বেতাগী পৌরসভা কার্যালয় ৩ হাজার টাকা বেতনে ঝাড়ুদার পদে চাকুরী করে।

 

মা রাশেদা বেগম মানুষের বাসায় পানি টানার কাজ করে। ধার-দেনা আর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে অসহায়ত্বের মধ্যে চলে তাদের ৫ সদস্যের পরিবার।

 

এ অবস্থায় ইসমাইল টাকা দাবী করলে তারা পুনরায় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তখন থেকেই মরিয়ম আক্তারকে মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে।

 

অসহায় মরিয়ম আক্তার অভিযোগ করেন, ‘ ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বামী রুহুল আমিন হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে মারধর শুরু করে তার ব্যবহৃত স্বর্ণের জিনিস খুলে নেয়। এ সময় মরিয়মকে তাঁর স্বামী ইসমাইল এলোপাথারী চড়-থাপ্পর ও কিল-ঘুষি দেয়। মাথার চুল কেটে দেয়। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মরিয়মের শরীরের বিভিন্নসাথানে রক্তাক্ত জখম করে দেয়। লাথি তল পেটে লেগে প্রচন্ড বেদনা ও যৌনাঙ্গে প্রচুর রক্তক্ষরণে মরিয়মের ৩ মাসের অন্ত:সত্তা থাকায় গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়।

 

ভরণ পোষন তো দুরের কথা মরিয়ম আক্তারের কোন ধরনের খোঁজ না রেখে এরই ফাঁকে স্বামী ইসমাইল হোসেন তার অসম্মতিতে মরিয়ম কে তালাক দিয়ে আরেকটি বিয়ে করে সেই স্ত্রীকে নিয়ে নির্বিঘেœ সংসার করে।

 

এর একাধিকবার আপোষ মাীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় স্বামী ইসমাইল হোসেনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল বরগুনার বেতাগী পারিবারিক আদালতে একটি মামলা করে (যার নং-৩৭, তারিখ: ২০১৭ খ্রি.)।

 

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত তার ভরন পোষন ও মোহরাণাসহ ২ লাখ ১০ হাজার ১ টাকা এ আদেশের ৬০ দিনের মধ্যে প্রদানের নিদের্শনা পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করলেও কোন সুফল না পাওয়ায় পুনরায় খোরপোষ দাবি করে মামলা করে নির্যাতিত মরিয়ম আক্তার।

 

মরিয়মের বাবা ছোহরাব গোমস্তা অভিযোগ করেন, ‘এ মামলায় তারা জামিনে বেরিয়ে ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকায় বিচার প্রার্থী তার মেয়ে মরিয়ম প্রতিকারের আশায় বছরের পর বছর ঘুরছে। যা দেখার কেউ নেই।’ তিনি আরো বলেন,‘ মরিয়ম তাঁর স্বামীর অধিকারও পাচ্ছে না এবং খোরপোষও পাচ্ছে না।