প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমতলীর পঞ্চম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে (১২) ধর্ষণের ঘটনার মুল হোতা দুই বন্ধু মেহেদী হাসান (২০) ও রাসেলকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ঘোড়াশাল পাওয়ার প্লান্টের মুল ফটকের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করে। শুক্রবার বিকেলে তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের বারেক মৃধার ছেলে ট্রাক হেলপার বখাটে মেহেদী হাসান আমতলী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়–য়া এক স্কুল ছাত্রীকে গত ছয় মাস ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু বখাটের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়নি স্কুল ছাত্রী। গত তিন মাস পূর্বে বখাটে মেহেদী ওই ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। গত ৭ নভেম্বর বিকেলে ওই ছাত্রীর সাথে দেখা করতে মেহেদী হাসান তার বন্ধু রাসেল আমতলী পৌর শহরের বাঁধঘাট চৌরাস্তায় সকাল সন্ধ্যা হোটেলে আসে। ওই হোটেল থেকে মেহেদী তার ভাবীকে দেখানোর কথা বলে ওই ছাত্রীকে হোটেলের সামনে সোলায়মানের বাসায় নিয়ে যায়।
ওই সময় সোলায়মান বাসায় ছিল কিন্তু দুই বখাটে ও স্কুল ছাত্রীকে ঘরে তুলে দিয়ে সোলায়মান তালা দিয়ে চলে যায়। ওই বাসায় দুই বন্ধু মিলে ওই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। অনেক কান্নাকাটি করেও দুই বখাটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি স্কুল ছাত্রী। দুই বখাটে ধর্ষণ শেষে ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি মোবাইলে ধারন করে। এই ঘটনা কাউকে জানালে এবং পুনরায় তাদের ডাকে সারা না দিলে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ায় ভয় দেখায় তারা এমন অভিযোগ ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর। ওইদিন রাতেই বাসায় গিয়ে এ ঘটনা ওই ছাত্রী তার মাকে জানায়। নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবকরা
এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পায়নি। এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ১০ নভেম্বর মেহেদী হাসানকে প্রধান আসামী করে তিন জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার ৯ দিন পর আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামী মেহেদী হাসান ও তার বন্ধু রাসেলকে নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ঘোড়াশাল পাওয়ার প্লান্টের মুল ফটকের সামনে থেকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার বিকেলে তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাদের বরগুনা জেল হাজতে পাঠিনোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে দুই আসামীকে নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ঘোড়াশাল পাওয়ার প্লান্টের মুল ফটকের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, দুই আসামীকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।