চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা) প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। কোনো অর্থবছরে এই পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতির মুখে পড়েনি বাংলাদেশ।
ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) বড় ধাক্কা লেগেছে।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য, জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেড়েছে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি।
এর আগে কখনই (প্রায় ২৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার) এতো বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যায়নি। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। একই অর্থবছরের পুরো সময়ে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ের (জুলাই-মার্চ) চেয়ে প্রায় ৬৪ শতাংশ বেশি এবারের বাণিজ্য ঘাটতি।
বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতির ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। জুলাই-মার্চ সময়ে এ ঘাটতি ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ১৪ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, বাংলাদেশ ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ৪০ লাখ বা ৬১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ৯ মাসে ৪২ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।
এর বিপরিত চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে দেশ আয় করেছে ৩৬ দশমিক ৬১ বিলিয়নন ডলার, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। সে হিসাবেই ৯ মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
আলোচিত সময়ে সেবা (বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি) খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৮০ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৯৯ কোটি ২০ লাখ ডলার।