কিশোরগঞ্জে মাঠ প্রশাসন সামলাচ্ছেন ৮ নারী ইউএনও। জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে বর্তমানে ৮টিতে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা।
পুরুষ কর্মকর্তারাই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে- এ ধারণা ভুল প্রমাণিত করে ওই নারী কর্মকর্তারা সফলতা আর নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের কেউ কেউ ব্যতিক্রমী ধারণার জন্ম দিয়ে হয়েছেন জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা কিশোরগঞ্জে ১৩টি উপজেলা রয়েছে। এর মধ্যে ৮টিতে প্রশাসনের শীর্ষপদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন আট নারী।
রাজনৈতিক হিসেবে ভিভিআইপি জেলা হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জের এসব নারী সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নিজের এলাকা মিঠামইনের মতো দুর্গম হাওর উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এক নারী।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব কর্মকর্তা প্রশাসনিক কাজ চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নারী ইউএনওরা।
জেলায় কর্মরত নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা হলেন- করিমগঞ্জে মাহমুদা, তাড়াইলে সুলতানা আক্তার, মিঠামইনে তাসলিমা আহমেদ পলি, ভৈরবে দিলরুবা আহমেদ, কুলিয়ারচরে ড. উর্মি বিনতে সালাম, পাকুন্দিয়ায় অন্নপূর্ণা দেবনাথ, কটিয়াদীতে ইসরাত জাহান কেয়া এবং বাজিতপুরে সোহানা নাসরিন।
২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নিজের উপজেলা মিঠামইনে ইউএনও হিসেবে যোগদান দেন তাসলিমা আহমেদ পলি। যোগদানের পরই হাওরে আগাম বন্যায় ফসলহানির ঘটনা ঘটে।
এ পরিস্থিতি তিনি সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করেন। নৌকায় ছুটে যান কৃষকের কাছে। সাহসিকতার সঙ্গে সামাল দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতিসহ ভিআইপিদের সফরের নানা কর্মসূচিও।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমানের এক নির্বাচনী এলাকার একটি উপজেলা কুলিয়ারচর। বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় ক্লাসের আয়োজন করে আলোচনায় আসেন কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. উর্মি বিনতে সালাম। মেধা আর উদ্ভাবনী প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য তিনি এবার ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ ইউএনও নির্বাচিত হন।
২০১৫ সালের ১২ আগস্ট তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন সুলতানা আক্তার। এখন পর্যন্ত তিনি সুনামের সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচিত প্রতিনিধি আর এলাকাবাসীর কাছে তিনি একজন মিষ্টভাষি আর কর্মচঞ্চল কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত।
করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কাজে যোগ দিয়েছেন চলতি বছরের ২১ মার্চ। তার আগেও এখানে একজন নারী ইউএনও কর্মরত ছিলেন। কাজে ও নিষ্ঠায় তিনিও এগিয়ে রয়েছেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী অন্নপূর্ণা দেবনাথ যোগদান করেন এ বছরের ১৩ এপ্রিল। নিষ্ঠার সঙ্গে দিনি দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি তাড়াইলে সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহানা নাসরিন। চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব হাতে নেন। এদিকে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান কেয়া গত ২১ সেপ্টেম্বর কাজে যোগ দেন।
মাঠ প্রশাসনের এসব কর্মকর্তা উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের নিয়মিত সভায় যোগ দিতে হয় এসব নারী কর্মকর্তাকে।কিশোরগঞ্জে ৮ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাড়াও সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আরও ৮ জন নারী।
এরা হলেন- কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরীন চৌধুরী, বাজিতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তসলিমা নূর হোসেন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিগ্ধা তালুকদার, সহকারী কমিশনার (শিক্ষানবিশ) শামীমা ইয়াসমীন, ফারহানা আলী, রেহেনা তাবান্নুম, মোছা. আকলিমা ও সাগুপ্তা হক।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আকতার জামিল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারীবান্ধব প্রশাসন পরিচালনায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। কিশোরগঞ্জেও নারীবান্ধব প্রশাসন পরিচালনায় বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। জেলায় কর্মরত ৮ জন নারী নির্বাহী কর্মকর্তা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা প্রশাসন তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com