৮ ডিসি ও ১ এসপিকে দুদকের চিঠি

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

নানা অনিয়ম ও অবহেলা নির্ণয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে আট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও এক পুলিশ সুপারকে (এসপি) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক জানায়, ফরিদপুরে কুমার নদ খননে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুর-এর সহকারী পরিচালক কমলেশ মন্ডলের নেতৃত্বে রোববার এ অভিযান পরিচালিত হয়।

সরেজমিন অভিযানে দুদক টিম পর্যবেক্ষণ করে, ভাঙা উপজেলার কুমার নদ খননে একটি কোম্পানিকে সাব-কন্ট্রাক্টের দায়িত্ব দেয়া হলেও অধিকাংশ কার্যক্রম হয়নি বললেই চলে। এছাড়া যে প্রতিষ্ঠানকে সাব-কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে তার নদী খননের অভিজ্ঞতা নেই মর্মেও তথ্য পাওয়া যায়।

মূল নদীতে বেশির ভাগ খনন হলেও শাখা নদীতে একটি মাত্র শ্যালো মেশিন ব্যবহারে ড্রেজিং হচ্ছে- এমন প্রমাণ পায় দুদক টিম।

এ বিষয়ে অনিয়ম ও অবহেলা নির্ণয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সুপারিশ প্রেরণ করেছে দুদক টিম।

এদিকে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর বালি অবৈধভাবে উত্তোলন করে নদীর তীরবর্তী পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে টিম অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ওই নদী থেকে উত্তোলিত বালু এবিবি ব্রিকস নামক একটি স্থানীয় ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছিল- এমন প্রমাণ পায় দুদক টিম।

এ বিষয়ে টিম পরিবেশ অধিদপ্তর, গাজীপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ জানান, পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকায় জরিমানা ও ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দুদক টিম পরবর্তীতে এমন ইটভাটা ও পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড প্রতিহতে অধিকতর সচেতন হবার পরামর্শ দেন। এছাড়া এলাকাবাসীকে পরিবেশের ক্ষতিসাধন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার যেকোনো অভিযোগ দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন- ১০৬) জানানোর পরামর্শ দেন।

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের গেট ইজারাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। দুদক টিম অভিযানকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। টিম জানতে পারে, সর্বোচ্চ দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা না দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের দর যাচাই সংক্রান্ত তথ্যাবলি পিপিআরের সাথে খতিয়ে দেখে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য ও সুপারিশের ভিত্তিতে মৈনট ঘাটে অবৈধভাবে টোল/চাঁদা আদায় বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

একইভাবে পাবনা জেলার সুজানগর থানায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও সরকারি বিধি মোতাবেক দরপত্র/লিজের মাধ্যমে বালি উত্তোলনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাবনা জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে পদ্মা রেলওয়ে প্রকল্প সংলগ্ন ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অবৈধভাবে ক্ষতিপূরণ দাবির প্রচেষ্টা বন্ধে নির্মিত অস্থায়ী স্থাপনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দুই জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে আগত বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও জেলা কারাগারের নানাবিধ অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ফরিদপুর, গাজীপুর, নোয়াখালী ও কিশোরগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসকগণকে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।