৮০ লাখেও আপোষ না করায় জোড়া খুন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম রাব্বি (৩৭) নামের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে ভারতে পালানোর সময় তাকে জেলার কসবা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কিন্তু তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি পুলিশ প্রকাশ করেনি। রাব্বি জেলা শহরের কাজিপাড়ার মুমিনুল ইসলামের ছেলে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী এরশাদুল হক ও তার সহযোগী বাদল সরকারকে গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় এরশাদুলের ছোট ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতার আশরাফুল ইসলাম রাব্বি জোড়া খুনের মামলার ১ নং আসামি নজরুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী।

 

তিনি আরও জানান, রাব্বি জোড়া খুনের ঘটনায় অন্যতম আসামি। ডিবি পুলিশের সহায়তায় কসবা সীমান্তবর্তী এলাকার বিদ্যানগর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল খুন হন এরশাদুল হকের চাচাতো ভাই সাইদুল্লাহ (৩০)। ওই খুনের ঘটনায় বাদী এরশাদুল হক। এতে একই গ্রামের বাসিন্দা আবু নাছির ও তার ছেলে নজরুল ইসলামসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়। আবু নাছির ও এরশাদুলের বাড়ি পাশাপাশি। ওই হত্যা মামলা আপোষ করার কথা বলে আবু নাছিরের দলের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নেন এরশাদুল হক। ৮০ লাখ টাকা নিয়েও আপস না করে মামলা চালিয়ে যাওয়ায় এরশাদুলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আবু নাছিরের ছেলে নজরুল। এদিকে নজরুলের বাবা আবু নাছিরকে ওই হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠান আদালত।

মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, জেলা শহরের কাজিপাড়ার রাব্বির সঙ্গে নজরুলের আগে থেকে পরিচয় ছিল। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে রাব্বি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, একটি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর গত একমাস ধরে তিনি নজরুলের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। এই সুবাদে তারা এরশাদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন (১৭ ডিসেম্বর) রাতে রাব্বি ও নজরুল পৃথক দুটি মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে যান। প্রথমে এরশাদুলকে বহনকারী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন রাব্বি। এরপর নজরুল তার মোটরসাইকেল থামিয়ে এরশাদুল ও বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। এরপর রাব্বি ও নজরুল জেলা শহরে এসে আলাদা হয়ে পালিয়ে যান।