জাল সনদে নিয়োগ পাওয়া দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ করলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। জুলাই মাসে এসব শিক্ষকদের বেতন অ্যাকাউন্টে ঢুকেনি বলে জানা গেছে।
মাউশি সূত্র জানান, বুধবার (২ আগস্ট) জুলাই মাসের এমপিওর চেকলিস্টে জাল শিক্ষকদের এমপিও স্থগিত করা হয়েছে। এই শিক্ষকদের বেতন গত মে মাসে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা প্রক্রিয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এবার শিক্ষকদের চাকরিজীবনে নেওয়া বেতন-ভাতার সব টাকা ফেরত চাওয়া হবে। যিনি ফেরত দেবেন না, তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) প্রতিবেদনে এসব শিক্ষক-কর্মচারীর জাল সনদে চাকরি পাওয়ার প্রমাণ মেলে। এরপর তাদের বেতন ভাতা বন্ধ করে চাকরিচ্যুত করা এবং ফৌজদারি মামলা করার সুপারিশ করে সংস্থাটি। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি। প্রাথমিক ধাপ হিসেবে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। এখন তাদের চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রয়োজন হলে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও করা হবে।
এ বিষয়ে মাউশি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জুলাই মাসে যে বেতন শিট তৈরি করা হয়েছে সেখানে তাদের বেতন-ভাতা পাঠানো হয়নি। অর্থাৎ তারা এখন থেকে আর বেতন পাবেন না। ডিআইএ প্রতিবেদনের আলোকে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, সহস্রাধিক জাল শিক্ষক শনাক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে তালিকা পাঠিয়েছিল ডিআইএ। স্কুল-কলেজে কর্মরত ৬৭৮ জন জাল শিক্ষকের তালিকা পাঠিয়ে এমপিও বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছিল। একইসঙ্গে তাদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা আটকানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। তবে তখন তা কার্যকর হয়নি। তারপর মে ও জুন মাসের এমপিও’র পাশাপাশি ঈদুল আজহার উৎসব ভাতাও দেওয়া হয়েছিল জাল সনদধারী শিক্ষকদের। অবশেষে তাদের এমপিও স্থগিত করা হলো।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে কর্মরত জাল সনদধারী ৬৭৮ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে এমপিওভুক্তদের বেতন বন্ধ করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে বলা হয়েছিল।
ওই তালিকায় স্থান পাওয়া জাল শিক্ষকদের মধ্যে ৪৭৯ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষক ছিলেন। বাকি ১৯৯ জন শিক্ষক ননএমপিও বা সরকারি অনুদানভুক্ত নন। জাল সনদধারীদের মধ্যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল করে ৩২৩ জন, ১২৫ জন জাল কম্পিউটার সনদ নিয়ে ও ৩১ জন বিএড-বিপিএডসহ অন্যান্য সনদ জাল করে এমপিও ভোগ করছিলেন।