৫০ কোপে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সুমাইয়া

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

 বরগুনার তালতলীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যার চেষ্টায় ঘুমন্ত অবস্থায় দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে

গৃহবধূর ভাই হানিফ হাওলাদার বাদী হয়ে তালতলী থানায় আহতের স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলো করিম খন্দকার এর সহযোগী মুর্তজা তালুকদারের ছেলে ইদ্রিস মাস্টার। মৃত মসজিদ খন্দকারের ছেলে কালাম খন্দকার রশিদ খন্দকার।

এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম এর ঘটনা স্থানীয় জনতা স্বামী আব্দুল করিম খন্দকারকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন বলে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম।

এসআই আমিনুল আরো জানান, গৃহবধূ সুমাইয়া একজন পর্দাশীল মহিলা ছিল। এলাকায় এই মহিলার অনেক সুনাম রয়েছে। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। কেন এমন বর্বরচীত কাণ্ড ঘটিয়েছে সঠিকভাবে কারণ উদঘাটন হয়নি। তদন্তের পর সব বেরিয়ে আসবে।

মামলার বিবরণ ও বাদী সূত্রে জানা যায়,

গত ১৫ ই এপ্রিল বুধবার রাত দুইটার দিকে তালতলী উপজেলার দক্ষিণ গাববাড়িয়া গ্রামে স্বামী আব্দুল করিম খন্দকার ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার ছবিকে দা দিয়ে কুপিয় জখম করা হয়। গৃহবধূর সারা শরীরে প্রায় অর্ধশতাধিক কোপের জখম রয়েছে।

স্বামী আব্দুল করিম খন্দকার ও তার সহযোগীরা গৃহবধূ সুমাইয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহত সুমাইয়া আক্তার ছবি সে ওই এলাকার একই থানার কড়ইবাড়িয়া গ্রামের সিদ্দিক হাওলাদারের মেয়ে।

মামলার বাদী হানিফ জানান, ১৩ বছর পূর্বে বরগুনার তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া গ্রামের সিদ্দিক হাওলাদারের মেয়ে সুমাইয়ার সাথে একই উপজেলার দক্ষিণ গাববাড়িয়া গ্রামের মৃত মজিদ খন্দকারের ছেলে আব্দুল করিম খন্দকারের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।

বিয়ের ৩-৪ বছর পর থেকে করিম তার স্ত্রী সুমাইয়ার কাছে যৌতুক দাবি করে নির্যাতন শুরু করে। যৌতুক না দেয়ায় প্রায় সময় সুমাইয়া কে মারধর শুরু করে দেয় করিম।

বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষ পরিবার পারিবারিকভাবে একাধিকবার বসা হলেও তাতে কোন সময় আসেনি।

সুমাইয়া একজন পর্দাশীল নারী। পরিবারের সুখ শান্তি ও ইসলামিক ভাবে স্বামীর কথা চিন্তা করে বারবার তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু করিম বারবার যৌতুক দাবি করে মাতালের মত প্রায় সময় সুমাইয়ার উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

গৃহবধূ সুমাইয়া স্বজনরা আরো জানান, করিম তেমন কোনো কাজকর্ম করত না

ঘরে এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুক চেয়ে ঝগড়া-বিবাদ করতে।

ঘটনার দিন গত বুধবার রাতে স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে যৌতুকের জের ধরে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে স্বামী করিম স্ত্রীর সুমাইয়াকে হত্যার হুমকি দেয়।

ওইদিনই গভীর রাতে করিম ও তার সহযোগীরা ঘুমন্ত অবস্থায় গৃহবধূ সুমাইয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। প্রায় তার শরীরের বিভিন্ন অংশে অর্ধশতাধিক কোপের জখম হয়েছে।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এদিকে মামলার আসামি ইদ্রিস মাস্টার ও তার লোকজন ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে প্রধান আসামী কে মানসিক রোগী বানানোর চেষ্টা চালিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়।