৪ শিক্ষার্থীর ফলাফল দিতেই ১১ মাস!

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

মাত্র চারজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফলাফল দিতে দীর্ঘ ১১ মাস সময় লেগেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। শুনতে অবাক হলেও এমনটাই ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের ক্ষেত্রে। এই চারজনই অধিভুক্ত কবি নজরুল সরকারি কলেজের ২০১৭-১৮ সেশনের আরবি বিভাগের নিয়মিত শিক্ষার্থী।

অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের মধ্যে শুধু কবি নজরুল সরকারি কলেজেই আরবি বিভাগ রয়েছে। আর এই বিভাগের শিক্ষার্থী সংখ্যাও চারজন।

গত ২১ নভেম্বর প্রকাশিত ওই ফলাফলের বিজ্ঞপ্তিতে দেখানো হয়, বিভাগের মোট চার পরীক্ষার্থীর সবাই উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাসের হার শতভাগ।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের আরবি বিভাগে নিয়মিত এই চার শিক্ষার্থী গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু দীর্ঘসময় পার হলেও তারা ফলাফল পাননি। সবশেষ গত বুধবার (২১ অক্টোবর) তাদের ফল প্রকাশ করা হয়।

মাত্র চারজন শিক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশ হতে ১১ মাস দেরি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধিভুক্ত সাত কলেজের অনেক শিক্ষার্থীরা এর সমালোচনা করেছেন। শাওন সাইফ নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‌‘আরবি নামের যে একটা বিভাগ ছিল, ঐটিই হয়তো ভুলে গিয়েছিল…।’

চার শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশে এত দীর্ঘসূত্রিতার কারণ জানতে চাইলে অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয়ক ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্ল্যাহ খোন্দকার বলেন, ‘এমনটা কখনো কাম্য নয়। আমি এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। হয়তো বর্তমান এই করোনা পরিস্থিতিতে বাড়তি চাপ থাকার দরুণ এমন সমস্যা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

অধিভুক্ত সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। পরীক্ষা শেষে ফলাফল না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।

সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছেন স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা চাকরিতে আবেদন করতে পারছেন না। এ নিয়ে গত ২০ অক্টোবর ‘৯ মাসেও ফল নেই, চাকরিতে আবেদন নিয়ে হতাশায় শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামে  একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই দিন বিকেলে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে ঢাকা কলেজে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেশনজট নিরসন ও করোনাকালীন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী বর্ষের ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেন অধ্যক্ষরা।

এসব বিষয়ে লিখিত আকারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নেহাল আহমেদ। এছাড়া আটকে থাকা ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশসহ আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে মাস্টার্সে ভর্তি শেষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় বলেও জানান তিনি।