আগুনে দগ্ধ হওয়ার ৪৮ দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন স্বর্ণা রাণী (২৪) নামে এক গৃহবধূ। গতকাল সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শাশুড়ি মিলে গত ৩০ জুলাই স্বর্ণার শরীরে আগুন দেয়।
মারা যাওয়া স্বর্ণা মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখারা ইউনিয়নের নয়সংঙ্কর গ্রামের কৃষ্ণ সরকারের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কামারখারা ইউনিয়নের উত্তর কামারখারা গ্রামের মিজি বাড়ির দিলিপ রায়ের ছেলে দিপ্ত রায় স্বর্ণা রাণীকে বিয়ে করেন। দিপ্ত নেশা করতেন। বিয়ের পর থেকেই দিপ্ত ও তার মা ঝর্ণা রানি রায় স্বর্ণাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। তারা স্বর্ণাকে মারধরও করতেন। গত ৩০ জুলাই সকালে যৌতুকের দাবিতে স্বর্ণাকে মারধর করে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী ও শাশুড়ি। গুরুতর অবস্থায় স্বজনরা স্বর্ণাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন। গতকাল সোমবার তিনি সেখানেই মারা গেছেন।
স্বর্ণার বাবা কৃষ্ণ সরকার বলেন, ‘আমার মেয়েরে ওরা অনেক মারধর করতো। আগুন দেওয়ার পাঁচ দিন আগেও ওরা ৪-৫ জন মিলে আমার মেয়েকে খুব মারধর করেছে। গত ৩০ জুলাই মারধর করে রান্না ঘরে নিয়ে স্বামী ও শাশুড়ি আমার মেয়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। মৃত্যুর আগে স্বর্ণা আমার অপর মেয়েকে সব বলে গেছে। আমি স্বর্ণার স্বামী-শাশুড়ির বিচার চাই। আমি আমার মেয়ের সৎকার কাজে ব্যস্ত আছি। সৎকার শেষে আমি থানায় অভিযোগ করব।’
টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মারা যাওয়া মেয়েটির বাবা আমাকে ঢাকা থেকে ফোন করেছিলেন। আমি বলেছি, যেহেতু পরিবারের অভিযোগ আছে সেহেতু, মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে হবে। মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’